









সুন্দর সমাজ
সুন্দর সমাজ গড়তে হলে,
সত্য আর ন্যায়ের বলে।
ভালোবাসা, দয়া-ধর্য্য,
হৃদয় হবে সবার স্বর্গ।
লোভ-হিংসা দূরে ঠেলো,
একতা গড়ে হাতে মেলো।
মানবতা থাকলে প্রাণে,
শান্তি হাসে সবুজ বনে।
শিক্ষার আলো জ্বালো ঘরে,
অজ্ঞতার আঁধার মরে।
সততা আর পরিশ্রমে,
দেশ এগোবে নতুন রঙ্গে।
সবার তরে ভালো চাও,
প্রীতির মালা গেঁথে নাও।
সুন্দর সমাজ হবে গড়া,
যদি থাকি হাতটি ধরা!
বই আমার বন্ধু
বইয়ের মাঝে জ্ঞান যে থাকে,
নতুন নতুন স্বপ্ন আঁকে।
পড়লে বই তো জানতে পারি,
পৃথিবীটা কেমন ভারী!
রূপকথার ঐ রাজপুত্র,
ভালোবাসে বইয়ের গন্ধ।
বিজ্ঞান বলে, গ্রহ-নক্ষত্র,
ইতিহাস দেয় জ্ঞানের সূত্র।
গল্প, কবিতা, মজার ছড়া,
বইয়ের মাঝে কত ধরা!
বন্ধু আমার বই যে সেরা,
শিখিয়ে দেয় পথের ভেরা।
তাই তো বলি, পড়ো সবাই,
বইয়ের আলো নিববে নাই!
একুশের চেতনা
তৌফিক সুলতান
রক্তে রাঙা একুশ এলো,
শ্রদ্ধা জানাই হৃদয় মেলো।
শহীদ আমার, অমর তারা,
ভাষার জন্য দিলো সারা।
মায়ের মুখের মিষ্টি ভাষা,
ছিল যে তবু বন্দি বাসা।
শপথ নিলো তরুণ প্রাণ,
রুখবে অন্যায়—এটাই প্রাণ।
বুলেট এলো, ঝরল প্রাণ,
তবু কাঁপেনি কণ্ঠ গান।
বাংলা মায়ের সন্তানেরা,
রেখে গেলো পথের ধারা।
আজও আমরা শপথ করি,
ভাষার মান রাখব জরি।
সত্য, সাহস, ত্যাগের গাঁথা,
একুশ চির অমলিন কথা।
২০টি মজার ছোট গল্প
রফিক একদিন পুরনো বোতল ঘষতেই এক জিন বেরিয়ে এলো।
জিন: হুকুম করুন, মালিক!
রফিক: আমায় ধনী করে দাও!
জিন: মালিক, অলস মানুষকে ধনী করলে সে আরও অলস হয়ে যায়!
রফিক: তাহলে আমাকে পরিশ্রমী করে দাও!
জিন: তাহলে আর ধনী হওয়ার দরকার নেই, মালিক!
রাহুল খুব পেটুক। একদিন সে একসঙ্গে ১০টা রসগোল্লা খেয়ে ফেলল।
বন্ধু: আরেকটা খাবে?
রাহুল: উঁহু! আর পারছি না!
বন্ধু: এই তো শিক্ষা! সবকিছুতেই সীমা থাকা দরকার!
বাবা: বেশি মোবাইল দেখো না!
ছেলে: কিন্তু বাবা, বিজ্ঞান তো বলেছে সব জানা ভালো!
বাবা: হ্যাঁ, কিন্তু বিজ্ঞান এটাও বলেছে, বেশি মোবাইল দেখলে চোখের পাওয়ার বেড়ে যায়!
শিহাব পরীক্ষায় খারাপ ফল করায় বাবাকে বলল—
শিহাব: বাবা, আজ থেকে তোমাকে ‘জিনিয়াস’ ডাকব!
বাবা: কেন?
শিহাব: তুমি তো বলো, "আমার ছেলে আমার মতোই হবে!"
নাতি: দাদু, সফলতার রাস্তা কোনটা?
দাদু: রাস্তা সবসময় সামনে থাকে!
নাতি: তাহলে আমি স্কুলের পেছনের গলিটা দিয়ে যাই কেন?
এক চোর রাতে এক বাড়িতে ঢুকে দেখল, দরজায় লেখা—
"চোর সাবধান! কুকুর আছে!"
চোর ভাবল, "কুকুর ঘুমিয়ে থাকলে ভয় কী?"
তখনই দেখল পাশেই লেখা—
"কিন্তু আমাদের কুকুর ঘুমোয় না!"
ইঁদুর মেকআপ করছিল।
বিড়াল: এটা কী করছো?
ইঁদুর: বউয়ের সামনে সুন্দর দেখাতে চাই!
বিড়াল: সুন্দর হলে তো আমার শিকার করা সহজ হবে!
শিক্ষক: তুমি পরীক্ষায় এত খারাপ করলে কেন?
ছাত্র: স্যার, আমি তো পরীক্ষার হলে একাই ছিলাম!
শিক্ষক: তাই?
ছাত্র: হ্যাঁ, কেউ সাহায্য করতে আসেনি!
মশা: তুমি আমাদের কেন মেরে ফেলো?
মানুষ: তোমরা রক্ত খাও!
মশা: তোমরাও তো মুরগি, গরু খাও!
মানুষ: সেটা আলাদা!
মশা: আমাদের দুঃখ কেউ বোঝে না!
মা: তুমি সারাদিন মোবাইলে কী করো?
ছেলে: আমি বই পড়ছি!
মা: তাহলে মোবাইলটা রেখে সত্যিকারের বই পড়ো!
ছেলে: কিন্তু মা, এটা ই-বুক!
মা: ঠিক আছে, তাহলে ই-রুটি খেয়ে নাও!
এক শিয়াল একদিন বলল—
শিয়াল: আমি আজ থেকে নিরামিষ খাবো!
মুরগি: বাহ! খুব ভালো কথা!
শিয়াল: তোরা একটু কাছে আয়!
মুরগি: কেন?
শিয়াল: নিরামিষ খাবার আগে তো তোদের কাছ থেকে বিদায় নিতে হবে!
ভূত ফেসবুকে একটা পোস্ট দিল—
"কেউ ভূত দেখেছো?"
একজন কমেন্ট করল: "না!"
ভূত উত্তর দিল: "পেছনে তাকাও!"
শিক্ষক: ভবিষ্যতে রোবট মানুষের জায়গা নেবে?
ছাত্র: হ্যাঁ!
শিক্ষক: তাহলে তোমার মতো অলস ছাত্ররাও পড়ালেখা করবে?
ছাত্র: না স্যার, রোবটই পরীক্ষা দেবে!
এক গাধা বলল:
"আমার মালিক খুব চালাক! সে আমাকে কম খাওয়ায়!"
অন্য গাধা: "তাহলে তুমি কী করবে?"
গাধা: "আমি বেশি খাওয়া শুরু করবো, যাতে সে মনে করে আমি দুর্বল হচ্ছি!"
বাবা: পড়তে বসো!
ছেলে: একটু পরে!
বাবা: কখন?
ছেলে: যখন তুমি ঘুমাবে!
বন্ধু ১: তুমি জানো টাকা আসলেই কী?
বন্ধু ২: হ্যাঁ!
বন্ধু ১: কী?
বন্ধু ২: এটা এমন একটা জিনিস, যা কম থাকলে সবাই শেখায় আর বেশি থাকলে সবাই শিখতে চায়!
বাবা: পরীক্ষায় কত পেয়েছো?
ছেলে: ১০০-এর মধ্যে ৪০!
বাবা: বাকি ৬০ কোথায়?
ছেলে: সেগুলো প্রশ্নপত্রের সঙ্গে ছিল!
হাঁস গান গাইছিল, "আমি সুন্দর, আমি গায়ক!"
এক কাক বলল: "তুমি তো কুৎসিত!"
হাঁস উত্তর দিল: "আমি গায়ক, মডেল না!"
খরগোশ: আমি এবারও তোমার সঙ্গে দৌড় প্রতিযোগিতা করব!
কচ্ছপ: ঠিক আছে!
খরগোশ: এবার আমি ঘুমোবো না!
কচ্ছপ: আর আমি এবার বাইক চালিয়ে যাবো!
সবজি বাজারে এক টমেটো কাঁদছিল।
পেঁয়াজ: তুমি কাঁদছো কেন?
টমেটো: মানুষ আমাকে কাঁচা খায়, রান্না করে খায়, সালাদ বানায়!
পেঁয়াজ: তাহলে?
টমেটো: কিন্তু আমাকে কাটলে কেউ কাঁদে না!
তোমার কোন গল্পটা সবচেয়ে মজার লাগল? 😆
সম্পর্ক ভাঙনের পেছনে নানা ধরনের কারণ থাকতে পারে, যার মধ্যে কিছু সাধারণ কারণ হলো:
🔹 বিশ্বাসের অভাব: সম্পর্কের ভিত্তি হলো বিশ্বাস। যদি একে অপরের মধ্যে বিশ্বাসের অভাব হয়, তাহলে তা সম্পর্কের ভাঙনে পরিণত হতে পারে।
🔹 যোগাযোগের অভাব: সম্পর্কের মধ্যে ভালো যোগাযোগ না থাকলে ছোটখাটো সমস্যা বড় আকার ধারণ করতে পারে, যা সম্পর্কের অবনতি ঘটায়।
🔹 বিশেষ লক্ষ্য বা পথের অমিল: জীবনের লক্ষ্য বা দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্যও সম্পর্কের মাঝে দূরত্ব সৃষ্টি করতে পারে।
🔹 অতিরিক্ত একে অপরকে অধিকার করা: সম্পর্কের মধ্যে স্বাধীনতা বজায় না রাখতে পারলে ব্যক্তিগত পরিসরের অভাব অনুভূত হয়, যা শেষ পর্যন্ত সম্পর্কের ভাঙনে যোগ দেয়।
🔹 অসীম আশা এবং চাপ: কখনো কখনো সম্পর্কের মধ্যে একজনের কাছ থেকে অনেক বেশি প্রত্যাশা রাখা অথবা চাপ সৃষ্টি করাও সম্পর্কের ক্ষতি করতে পারে।
সম্পর্ক ভাঙনের মানসিক প্রভাব অস্বাভাবিকভাবে গভীর হতে পারে, বিশেষ করে যদি সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী এবং হৃদয়ের গভীরে প্রোথিত থাকে। কিছু প্রভাব হলো:
🔹 দুঃখ এবং একাকীত্ব: সম্পর্ক ভাঙলে মানুষ গভীর দুঃখ এবং একাকীত্বের অনুভূতি অনুভব করে, যা তাদের মানসিক অবস্থাকে দুর্বল করে দেয়।
🔹 আত্মবিশ্বাসের অভাব: সম্পর্কের ভাঙনের ফলে আত্মবিশ্বাসে বড় ধরনের আঘাত আসতে পারে, যা ভবিষ্যতের সম্পর্কের প্রতি ভয় এবং সন্দেহের সৃষ্টি করতে পারে।
🔹 মানসিক চাপ: সম্পর্কের ভাঙনে যে মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়, তা কখনো কখনো দেহের উপরও প্রভাব ফেলতে পারে, যেমন ঘুমের সমস্যা, খাওয়া কমে যাওয়া, বা অবসাদ।
সম্পর্ক ভাঙনের পর জীবনে নতুন দিক এবং নতুন শুরু গ্রহণের জন্য কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে:
✅ স্বাস্থ্যকর আত্মসমালোচনা: সম্পর্ক ভাঙার পর নিজেকে মূল্যায়ন করতে হবে এবং নিজের ভুলগুলো শিখে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।
✅ অভিজ্ঞতা থেকে শেখা: সম্পর্কের শিক্ষা নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে, এবং অন্যদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে এমন দৃষ্টিভঙ্গি রাখতে হবে যা ভবিষ্যতে সুস্থ ও আনন্দময় হবে।
✅ মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করা: মানসিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম যেমন—ধ্যান, যোগব্যায়াম, বা পছন্দের কাজের মাধ্যমে সময় কাটানো যেতে পারে।
✅ সাহায্য নেওয়া: যদি সম্পর্কের ভাঙন অত্যন্ত গুরুতর হয়, তাহলে কাউন্সেলিং বা মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে।
সম্পর্ক ভাঙন জীবনের একটি কঠিন অভিজ্ঞতা হতে পারে, কিন্তু এটি একটি নতুন শুরু এবং আত্মবিশ্বাস পুনঃপ্রতিষ্ঠার সুযোগও তৈরি করতে পারে। সময়, সহানুভূতি, এবং আত্মসমালোচনার মাধ্যমে একে অপরকে বুঝে, ভবিষ্যতে সুস্থ সম্পর্ক স্থাপন সম্ভব।
![]() |
সেকালের স্বাদ |
ডি
ভোর্স
![]() |
ইয়াছিন আরাফাত |
আমার নাম লিলি। আমাদের বাড়ি ছোট্ট রূপালি গ্রামে। এখানেই আমার জন্ম এবং বেড়ে ওঠা। আমার কাছে আমাদের গ্রামের চেয়ে পৃথিবীতে আর কোন সুন্দর গ্রাম নেই। এখানেই রয়েছে বড় খাল এবং খালের দুপাশে চাষাবাদ করার ফসলি জমি একটু পরেই পাহাড়। এখানে সহজে মাছ, মাংস, শাকসবজি নানা ধরনের ফলমূল সহজেই পাওয়া যায়। এইখানে রয়েছে নান্দনিক শৈলীতে তৈরি ঐতিহ্যবাহী মনরূপা মসজিদ। মসজিদের সামনে বড় পুকুর যেখানে গ্রামের সহজ সরল মানুষ ওযু করে, গোসল করে। পুকুরের চারপাশে রয়েছে নারকেল ও সুপারি গাছ। এখানে আরও রয়েছে রূপালি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও রূপালি উচ্চ বিদ্যালয় এবং বিদ্যালয়ের সামনে বড় খেলার মাঠ। এ যেন স্বপ্নের মতো একটা গ্রাম। এখানেই আমার পড়ালেখা স্বাভাবিক ভাবে চলছিল কিন্তু একদিন হঠাৎ করেই বিয়ে দিয়ে দিল। আত্মীয় স্বজন পাড়া প্রতিবেশী তেমন কাউকে ই দাওয়াত দেওয়া হয়নি। বিয়ের রাতে শুধু নানার বাড়ি থেকে নানা ভাই আসছিল। বিয়ের দিন আসরের পর সাজানোর জন্য পার্লারে নিয়ে যাওয়া হয়। আমার সাথে গিয়েছিল আমার ছোট বোন কারিমা। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির পরিবার আমাকে আর বাবার বাড়িতে আসতে দেয়নি। পার্লার থেকে সোজা শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। বিয়ের নেই কোনো উত্তেজনা কিংবা নেই কোনো আয়োজন। আমাকে নিয়ে গিয়ে বসানো হলো একটা রুমে যেখানে একটা থাকার খাট ছাড়া আর কিছুই ছিল না। যাতে আমার আত্মীয়স্বজন আসলে দেখলে বলতে পারেন। বাড়ি থেকে শুধু মেয়েই দিলেন। মেয়ের সাথে কিছু দিলেন না? শ্বশুরবাড়িতেও তেমন কোনো মেহমান ছিল না। যারা ছিল তারা হলেন আমার স্বামী শফিউলের তিন বোন সুমি,রুমি, সানজিদা,তাদের বাচ্চারা এবং শফিউলের আম্মু।
মেহমানদের উত্তেজনা না থাকলে কি হবে। শফিউলের মায়ের উত্তেজনা ঠিকই ছিল। কিন্তু তা মেহমানদের খুশি করতে নয়। আমাকে কথা শুনানোর জন্য, উত্তেজিত হয়ে বলতেছে চায়ের দোকানদারের মেয়ে আমার বাড়িতে বউ হয়ে আসে কেমনে?
শফিউলের বোনেরা আমাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলল তোমার শাশুড়ি অসুস্থ মানুষ ওনার কথায় কান দিও না। এশার পর আমার বড় ভাই, আমার জেঠাতো ভাইয়েরা আমাকে দেখতে আসেন। শফিউলের বোনেরা ওদের কে রুম দেখাই দেখাই বলতেছে এইরুমে এটা লাগবে ঐ রুমে ঐটা লাগবে একেকজন একেকটা বলতে লাগল । কিন্তু ওনারা শুনতেই আছেন, কিছু বললেন না।
আমার ভাইয়েরা রাতে চলে যাওয়ার পরে আশে পাশের বাড়ি ঘর থেকে অনেকে দেখতে আসল এবং কয়েকটা ভাবি কিছু সস্তা উপদেশও দিয়ে গেল। আমি চুপ করে বসে রইলাম । রাত দশটার পর মানুষের আসা বন্ধ হয়ে গেলে স্বামী রুমে এসে আমার কিছু লাগবে কি'না অসুবিধা হচ্ছে কি'না তা জিজ্ঞেস করে রুম থেকে বেরিয়ে গেল এবং পাঁচ মিনিট পর ওযু করে ফিরে আসল বলল নামাজ পড়বে। নফল নামাজ। জায়নামাজ বিছিয়ে আমাকে বলল আমার শাড়ির আঁচল যেন জায়নামাজের ওপর দিয়। স্বামীর কথা মতো জায়নামাজের পাশে বসে শাড়ির আঁচলটাকে জায়নামাজের ওপরে বিছিয়ে দিলাম। স্বামী শফিউল নামাজ শেষ করে ওঠলে আমিও নামাজ আদায় করে নিলাম। তারপর অনেকক্ষণ গল্প করে ঘুমিয়ে গেলাম। সকালে গোসল করে আসলে শফিউলের মেজ বোন শাড়ি পড়িয়ে দিল। সকাল নয়টার দিকে শফিউল রেডি হয়ে কোথায় যেন গেল কিছু বলে যায়নি। আমিও আঁক বাড়িয়ে কিছু জিজ্ঞেস করি নাই। দুপুরের পরে আমার ছোট বোনের জন্য জামা নিয়ে হাজির হলেন। বললেন ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিল । ছোট বোনের স্কুল খোলা তাই আসরের পরে তাকে জামা এবং পাঁচশত টাকা দিয়ে গাড়িতে তুলে দিল। আমার সামনে সব ঠিকঠাক ভাবে চলছিল। কিন্তু ভিতরে ভিতরে আমার নামে তাদের মা ও ভাই বোনদের মধ্যে আলোচনা সমালোচনা চলতেছিল। (2)
কয়েকদিন পর স্বামী এবং তাদের বাড়ির আত্মীয়স্বজন আমাকে নিতে আসেন। তাদের বাড়ি থেকে আমাকে নিতে আসবে শুনে তাদের জন্য বিভিন্ন খাবারের আয়োজন করেন এবং আমার ফুফি ও খালাম্মাদের দাওয়াত করেন। শ্বশুরবাড়ির লোকদের আগে আমার আত্মীয় আগে চলে আসে এবং আমাদের পরিবার থেকে আমাকে আর শ্বশুর বাড়িতে না পাঠানোর পরিকল্পনা শুনে বিরোধীতা করে এবং নিতে আসলে তাদের সাথে দিয়ে দেওয়ার জন্য পরামর্শ দেন। কিন্তু আমার পরিবার আত্মীয়স্বজনের কথা না শুনে আমাকে লুকিয়ে রাখে এবং শ্বশুরবাড়ির লোকদের সামনে না যেতে নিষেধ করে। পরিবারের কথা মত আমাকে চাচার বাড়িতে লুকিয়ে রাখে। শ্বশুরবাড়ির লোকজন আসলে তাদের ভালো ভাবে আপ্যায়ন করেন এবং বিভিন্ন ধরনের খাবার পরিবেশন করেন। খাবার-দাবার শেষ করে আমি রেডি হয়েছি কি'না জিজ্ঞেস করলে আমার পরিবার আমাকে আর তাদের কাছে মেয়ে পাঠাবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন। এই কথা শুনে শ্বশুরবাড়ির লোকজন কিছুক্ষণের জন্য স্তব্ধ হয়ে যান। পরে আবার সাড়া বাড়ি হৈচৈ শুরু করে দেন। আমাকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য এইদিক সেদিক আমাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করে দেন। কোথাও না পেয়ে আমার আম্মু এবং পরিবারের সদস্যদের সাথে জগড়া শুরু করে দেন। আম্মু বলতেছে যারা কথা দিয়ে কথা রাখে না, যারা কিছু চাইবে না বলে আমার মেয়েকে নিয়ে গিয়ে যৌতুকের জন্য অত্যাচার করে, যারা আমার বাড়ির মানুষকে অপমানিত করে, তাদের বাড়িতে আমি আমার মেয়ে দিতে পারি না। যেখানে বিয়ের চারদিনের ভিতরে আমার মেয়ে অস্বস্তি অনুভব করে, যেখানে আমার মেয়ের জীবনের ঝুঁকি রয়েছে সেখানে আমার মেয়ে দিতে পারি না।
সত্যি বলতে বিয়ের আগে শ্বশুরবাড়ির লোকজন যখন আমাকে দেখে তখন তারা কোনো কিছু ছাড়া আমাকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য রাজি হয়ে যায়। তারপরও আমাদের পরিবার থেকে আমাকে তাদের পরিবারে বিয়ে দিতে চাইছিল না। কারণ ইতিমধ্যে আমার জন্য অনেক ভালো ভালো বিয়ের সম্বন্ধ এসেছিল শুধু যৌতুক চাওয়ায় বিয়েগুলো ভেঙ্গে যায়। কিন্তু আমার শ্বশুরবাড়ির পরিবার আমার পরিবার থেকে বিয়ে দিবে না শুনে তারা অনেক জোরাজুরি করে আব্বু-আম্মুকে রাজি করাই শুধু তাদের মেয়েকে সাজিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে। আমার বিয়ে তাদের পরিবারে না দেওয়ার জন্য আমার চাচার পরিবার থেকে অনেক নিষেধ করেছিল। এমনকি আমার মা-বাবাকে পাগল হয়ে গেছেন নাকি বলে গালি দিয়েছিল। কিন্তু আমার মা-বাবা কারো কথা না শুনেই আমাকে শফিউলের সাথে বিয়ে দেয়ার জন্য রাজি হয় যায়। শফিউলের পরিবারও চালাকি করে আমাকে দেখার পরের দিন তাড়াহুড়ো করে তাদের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য জোরালোভাবে চেষ্টা করে এবং সফলও হয়। আমাকে বিয়ের পার্লার থেকেই তাদের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। এই অল্প সময়ের ভিতরে বিয়ে হয়ে যাওয়ায় আমার পরিবার থেকে তাদের পরিবারে তেমন কিছু দেওয়া সম্ভব হয়নি। তারা চাইনিও। তারা না চাইলেও আমাদের পরিবার থেকে ফার্ণিচার, সমাজের মানুষকে খাওয়ানো সব করত কিন্তু সময় সুযোগের কারণে করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু পরবর্তীতে করার ইচ্ছে থাকার পরেও শ্বশুরবাড়ির অমানুষিক আত্যাচার, অযৌক্তিক আবদার আমার পরিবার মেনে নিতে পারে নি। তাদের অপমান সহ্য করতে পারে নি। তাই তাদের পরিবারে আমাকে পাঠাতে আর রাজি হয় নি। এর কিছুদিন পর আমার পরিবার থেকে তাদের বাড়িতে ডিভোর্স পেপার পাঠিয়ে দেওয়া হয় । এরপর আমার মন পুরোপুরি ভেঙ্গে যায়।
এই যে লিলি,
তোমার পরিবারের জন্য নিজের জীবনকে করে দিলা জলাঞ্জলি।
হয়েছো তুমি ভাগ্যের করুণ বলি
তোমার নিজের মনে হচ্ছে যেন পৃথিবীর সব কিছুকে এড়িয়ে চলি।
তোমার এমন পরিস্থিতিতে তোমাকে নিয়ে কতজন করতেছে কত দলাদলি।
তোমার নম্র, ভদ্র, অমায়িক স্বভাব দেখে তোমার এমন অবস্থার জন্য দুঃখ নিয়ে করতেছে বলাবলি।
অন্য দশজনের ন্যায় হাসি খুশি ছিল তোমার জীবন,
তোমার আচার-আচরণ, যাবতীয় গুণাবলি দ্বারা রাঙিয়ে ছিলে এই সুন্দর ভুবন।
যাবতীয় খারাপ কাজ থেকে মুক্ত হয়ে নিয়ন্ত্রণ করেছিলে যৌবন।
এই যে লিলি,
তোমার এমন পরিস্থিতির জন্য দায়ী কিছু ভুল,ধয্য না ধরা, দম্ভ, অহংকারী ভাব, মানুষকে মানুষ বলে মনে না করা,যে কোনো কিছু বাইরের অবস্থা দেখে বিচার করা, কিছু টা টাকার প্রতি লোভ।
সবচেয়ে বড় কারণ অনেকটা নিয়তিই দায়ী খুব।
জীবনের স্বাভাবিক গতিপথকে করে ফেলেছে চুপ।
কত শত, হাজার, লক্ষ, কোটি ছেলে বিমোহিত, মুগ্ধ হয়েছে দেখে তোমার ঐ রূপ,
যেই দেখে দেখতেই থাকে, ফেরাতে চাই না চোখ।
হোক না সেই, শিশু, যৌবক, পূর্ণ বয়স্ক কিংবা বৃদ্ধ লোক।
খারাপ নজরে আরো দেখে তোমার ঐ বুক।
তোমাকে পেয়ে পেতে চাই পৃথিবীর খুবই দুর্লভ জিনিস সুখ,
চাইবে না কেউ তুমি কারো হোক।
যতদিন থাকবে তোমার ঐ সৌন্দর্য, সৌন্দর্যের মহিমায় পেতে চাইবে সকল লোক।
তোমার ই সিদ্ধান্ত,সঠিক মানুষ, সঠিক জীবন সঙ্গী বেচে নিতে হবে যতই বাধা বিপত্তি আসুক।
এই যে লিলি,
যদিওবা সেই দুর্দিন চলে গেছে, করতেছ স্বাভাবিক জীবন যাপন।
করতেছ সঠিক মানুষের অপেক্ষা, কে হবে সেই সত্যিকারের আপন?
যাকে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করা যায়,যার সাথে নির্দ্বিধায় হওয়া যায় দাফন।
সঠিক মানুষ পেলে বরণ করতেও ভালো লাগবে তোমার মোড়ানো সেই কাফন।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি ইয়াছিন আরাফাত
কবি,গল্পকার ও প্রাবন্ধিক
উপ-দপ্তর সম্পাদক, বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
মোবাইল :- 01876729147
ইমেইল :- eashina404@gmail.com
দুঃ
স্বপ্ন ইয়াছিন আরাফাত
![]() |
ইয়াছিন আরাফাত |
প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর, অনিন্দ্য সুন্দর রূপপুর।
দেশের নাম রূপপুর হওয়ার পেছনে অনেক গুলো কারণ না থাকলেও একটা রহস্য রয়েছে। এই গ্রাম যেমন সুন্দর তেমনি এই গ্রামের মেয়েদের রূপের রহস্য মানুষের অজানা হলেও খ্যাতি রয়েছে দেশ জুড়ে।
এমন সুন্দর মেয়ে পাওয়া মুশকিল সারাদেশ ঘুরে। তাইতো সুন্দরী রমণী বিয়ে করার জন্য দেশের মানুষ রুপপুরের উদ্দেশ্যে দৌড়ে।
তাই দেশের মানুষ এই দেশের নাম দিয়েছে রূপপুর। এই এলাকার মানুষজনও শান্ত, সহজ সরল ও সুন্দর মনের অধিকারী মনে হলেও আসলে এই এলাকার মানুষ জন খুবই হিংসা পরায়ন, কেউ কারো ভালো দেখতে পারে না, সহ্য করতে পারে না, অধিকাংশ মানুষ একজন অন্যজনের সাহায্যে এগিয়ে আসে না, এই এলাকার মানুষ ইসলাম ধর্মানুলম্বী হলেও ইসলাম সম্পর্কে তাদের তেমন ধারণা নাই বললেই চলে। যারা হুজুর তারাই শুধু ইসলাম কে নিয়মিত চর্চা করে। বাকি খুব কম মানুষজন নামাজ, যাকাত, রোজা, হজ পালন করেন। তাকরিমের বাড়ি এই রূপপুর এবং তার বন্ধু গালিবের বাড়ি তার বাড়ি থেকে একটু দূরে। ছোট থেকে কিশোর বয়স পযর্ন্ত দেশ সেরা রূপপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ার শুভাতে কেউ কাউকে ভুলে থাকে নি, ছেড়ে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। তাদের মধ্যে কত মিল আর কত শক্তিশালী বন্ধুত্বের বন্ধন তা প্রকাশ করার মতো না। তবুও তাদের মধ্যে কি যেন অজানা শক্তি বিভেদ সৃষ্টি করছে।
তাকরিম থেকে গালিব সুদর্শন এবং পৈতৃক ভাবে অনেক টাকার মালিক। দুই জন যখন কোনো অনুষ্ঠানে যেত তখন গালিবকে সবাই বেশি সমীহ করত এবং তার বাবা-মা এবং পরিবার পরিজন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করত কিন্তু তাকরিম একটু কালো এবং তার পৈতৃক ভাবে টাকা-পয়সার সংকট থাকার কারণে কেউ তার থেকে এতকিছু জিজ্ঞেস করত না। এমনকি প্রয়োজন না হলে কেউ নিজ থেকে তার সাথে কথা বলতে আসত না। ছোট থেকে এইসব বৈষম্য দেখতে দেখতে সে অভ্যস্ত আবার বিরক্তও বটে। কিন্তু এই দেশের মানুষ টাকার প্রতি আসক্ত, ভক্তি, এবং টাকার জন্য মানুষের গোলামী করার যে অভ্যেস যুগ যুগ ধরে চলে আসতেছে তা সেই একা কিভাবে দূর করবে? মানুষের ভিতরের সৌন্দর্যের প্রতি নজর না দিয়ে বাইরের সৌন্দর্যের প্রতি যে আকর্ষণ তা কবে যে দূর হবে? কবে যে সাদা-কালো, ধনী গরিবের বৈষম্য ঘুচবে সেটা নিয়ে সে সবসময়ই ভাবে এবং কিভাবে এই সুন্দর দেশের ন্যায় মানুষের মনও সুন্দর হবে। তবে সেটা কখন হবে? কিভাবে হবে? কার মাধ্যমে হবে? প্রায় সময় তাকরিম এইসব বিষয় নিয়ে ভাবতে ভাবতে তার মন খারাপ হয়ে যায়। দেশের এতো সুন্দর, বিখ্যাত, টাকার মালিকের মাঝে নিজেকে খুব ছোট মনে করত। তাকরিম এরই মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা শেষে উচ্চ শিক্ষার জন্য মিশরে চলে যান। মিশরের আল - আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া শেষ করে তিনি দেশে চলে আসেন। এবং দেশের মধ্যে ইসলামের দাওয়াত দিতে থাকেন। দেশের দরিদ্র মানুষ ইসলামকে ভালো ভাবে না জানলেও ইসলামকে পালন করার যথা সাধ্য চেষ্টা করেন। বিদেশ থেকে পড়ালেখা শেষ করে এসে দেখে ততদিনে গালিব দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে বসে আছে। তার বন্ধু তাকরিম বিদেশ থেকে এসে দেশের মানুষের মাঝে ইসলাম প্রচার করতে শুনে সেই অনেক খুশি হলো এবং তার সাথে দেখা করার মনস্থির করল কিন্তু দেশের নানা কাজের মধ্যে ব্যস্ত থাকাই বন্ধুর সাথে সাক্ষাৎ করা সম্ভব হয়নি।
গালিব দেশের নানা কাজে দেশের মধ্যে তেমন ঘুরে বেড়াতেন না। দেশের নাগরিকদের অবস্থা সম্পর্কে সেই বেখবর। প্রতিদিনের ন্যায় ঘুমিয়ে পড়লেন এবং গভীর ঘুমে কোথায় যেন হারিয়ে গেল। স্বপ্নের মধ্যে দেখতেছে তার কৈশোরে হত দরিদ্র মানুষের সাথে তার বসবাস। দেশের শিক্ষিত সমাজ তাদের পরিত্যক্ত বস্তুর মতো ফেলে তাদের থেকে অনেক দূরে বসবাস শুরু করেছে যেখানে তাদের যাওয়া নিষেধ। খেয়ে, না খেয়ে জীবন চলছে। এক সময় তাদের খাওয়ার মতো কিছু নেই তখন তাদের সরদার তাদের সকলকে ডেকে সিদ্ধান্ত নিল যে পরবর্তী খাবার না পাওয়া পযর্ন্ত এক পরিবার থেকে একজনকে খাবার হিসেবে দান করতে হবে। এক পরিবার থেকে একজন একজন করে খেতে খেতে এবার তাদের পরিবার থেকে তাকে খাবার হিসেবে দান করেন। যখনই তাকে খাওয়ার জন্য জবাই করা হবে, যখনই তার গলায় ছুরি চালানো হয় সাথে সাথে তার ঘুম ভেঙ্গে যায়, এবং গলায় হাত দিয়ে বড় করে জোরে জোরে নিশ্বাস নিতে থাকে, হার্টবিট অনেক দ্রুত ওঠা নামা করতে শুরু করল। এরপর সকাল হওয়া পযর্ন্ত সেই আর ঘুমাতে পারল না। এর কিছুক্ষণ পর ফজরের আযান হলে ওযু করে নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদে চলে যান।
গালিব এই স্বপ্ন দেখার পর কোথাও কোনো শান্তি পাচ্ছিল না। তার হঠাৎ তার বন্ধু তাকরিমের কথা মনে পড়ল এবং বন্ধুর সাথে সাক্ষাত করার জন্য বেরিয়ে পড়লেন। সারাদিন বন্ধুর খোঁজে কেটে গেল কোথাও বন্ধুকে পেল না। গালিব এশার নামাজ আদায় করে মসজিদের এক কোণে বসে যখন বন্ধু তাকরিমের কথা চিন্তা করছিলেন এমন সময় হঠাৎ এক লোক তাকে এসে সালাম দিল এবং কেন এভাবে মসজিদের এক কোণে অনেকক্ষণ ধরে বসে আছে জানতে চাইলে সেই বন্ধুর কথা বলে। তখন ঐ লোকটি তার বন্ধু তাকরিমের কাছে নিয়ে যায়। গালিব তার স্বপ্নের কথা বন্ধুকে খোলে বলেন। তখন তার বন্ধু তাকরিম বলে-- তুমি কি দেশের খবরাখবর রাখ? তখন গালিব বলে হ্যাঁ। তাকরিম তখন তাকে বলে দেশের অর্ধেক মানুষ না খেয়ে দিন কাটায়। যারা ধনী তারা দিন দিন আরো ধনী হচ্ছে আর যারা গরিব তারা আরো গরীব হচ্ছে। দেশের মধ্যে সাদা-কালো, ধনী-গরিব বিশালাকার বিভেদ সৃষ্টি করেছে। তোমার ঐ মিডিয়া যেসব খবর প্রচার করে তা তোমাকে খুশি করার জন্য করে। দেশের মানুষ ভালো নেই বন্ধু ভালো নেই। তাই তুমি এই স্বপ্ন দেখেছ বন্ধু।
গালিব: এর সমাধান কী?
তাকরিম:- মানুষের তৈরি শাসন বাদ দিয়ে দেশের মধ্যে ইসলামি শাসন প্রতিষ্ঠা করা।
গালিব:- তারপর কী করতে পারি?
তাকরিম:- দেশের মানুষকে ইসলামি শিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা হাতে নিতে হবে। যেহেতু দেশের মানুষ ইসলাম সম্পর্কে জানে না তাই বয়স্কদের কে রাতে শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করতে হবে। নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করে দিতে হবে। পড়াই যাতে মনযোগ থাকে এবং নিয়মিত শিখতে আসে সে জন্য আধা ঘন্টা করে পড়াতে হবে। যারা নিয়মিত ক্লাস করবে পড়া হাজিরা দিবে তাদের মাসিক তিন হাজার টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে । যারা বর্তমানে পড়ালেখা করতেছে তাদের জন্য পাঠ্য বইয়ে বৈচিত্র্য আনতে হবে। ইসলামীক বইয়ের পাশাপাশি বিজ্ঞান, ভৌগোল, দর্শন বিভিন্ন ভাষা শিক্ষার বই ইত্যাদি পাঠ দানের ব্যবস্থা করতে হবে। শিক্ষক যাতে আন্তরিকতার সাথে পড়াই সে জন্য উচ্চ সম্মানীর ব্যবস্থা করতে হবে।
গালিব: তা ঠিক আছে। শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নত হলো। দেশের গরিব মানুষ গুলোর কি হবে?
তাকরিম:- দেশের মানুষ যখন ইসলামি শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে যাবে। যখন সবাই এক সাথে নামাজ পড়বে তখন ধনী-গরিব, সাদা-কালো বিভেদ ভুলে যাবে। সমাজ থেকে ভেদাভেদ দূর হয়ে যাবে। ধনীদের থেকে যাকাত আদায় করে গরিবদের মধ্যে বন্টন করার ফলে দেশের মধ্যে আর গরীব থাকবে না। বর্তমানে যেভাবে মানুষ না খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন এটা আর থাকবে না।
গালিব : ঠিক আছে। তবে একটা শর্ত আছে।
তাকরিম : কি শর্ত?
গালিব: আমি প্রথমে দশ বছর মেয়াদী পরিকল্পনা হাতে নিব। দশ বছর পর যদি দেশের অবস্থার পরিবর্তন না হয়। জন সম্মুখে নিজ হাতে তোর প্রাণ নিব।
তাকরিম: মুহূর্তে রাজি হয়ে গেল। তবে সে একটা শর্ত দিল সেটা হচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থার দায়িত্বে আগামী দশ বছর তার কথা মতো চলবে।
গালিব:ঠিক আছে।
ইসলামিক শাসন প্রতিষ্ঠার দশ বছর পর রুপপুর দেশের মধ্যে সত্যি সত্যি যেন আসমান থেকে শান্তি নেমে আসল। তাকরিমের জীবন রক্ষা পেল। দেশের মধ্যে সবাই শিক্ষিত এবং জ্ঞানে গুণে বিশ্বের মধ্যে রূপপুর এখন সু-প্রসিদ্ধ। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে জ্ঞান চর্চার জন্য মানুষ এখন রূপপুর আসে। গালিব চিন্তা করে দেখল এই স্বপ্ন যদি সেই না দেখত এবং জ্ঞানী বন্ধুর কাছে না বলত। তাহলে এই পরিবর্তন কখনো সম্ভব হতো না। গালিব বুঝতে পারে- সেই দুঃস্বপ্নও ভালো, যদি সেটা মঙ্গল বয়ে আনে।
-
আমি ইয়াছিন আরাফাত
কবি,গল্পকার ও প্রাবন্ধিক
উপ-দপ্তর সম্পাদক, বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
মোবাইল :- 01876729147
ইমেইল :- eashina404@gmail.com
![]() |
বই সকালের স্বাদ |
![]() |
সেকালের স্বাদ |