বাংলাদেশ লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
বাংলাদেশ লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

মঙ্গলবার, ফেব্রুয়ারী ১৮, ২০২৫

আজকের  বাংলাদেশের প্রধান সংবাদ শিরোনামগুলো

আজকের বাংলাদেশের প্রধান সংবাদ শিরোনামগুলো

 আজকের (১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) বাংলাদেশের প্রধান সংবাদ শিরোনামগুলো :


১. পরিবারসহ ওবায়দুল করিমের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

সাবেক মন্ত্রী ও ব্যবসায়ী ওবায়দুল করিম এবং তার পরিবারের সদস্যদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। দুর্নীতির অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান রয়েছে। 



২. ফেনীতে পিকআপ-কাভার্ড ভ্যান সংঘর্ষে নিহত পাঁচ

ফেনী জেলায় পিকআপ ভ্যান ও কাভার্ড ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। দুর্ঘটনাটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ঘটেছে। 

৩. পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে তিস্তা পাড়ে মানুষের ঢল

তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে নদীর পাড়ে হাজারো মানুষ সমবেত হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন। তাদের দাবি, তিস্তার পানির সুষ্ঠু বণ্টন নিশ্চিত করতে হবে। 

৪. মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের নতুন নেতৃত্বে ফখরুল-আক্তার-রহমতুল্লাহ

মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের নতুন কমিটিতে ফখরুল সভাপতি, আক্তার সাধারণ সম্পাদক এবং রহমতুল্লাহ সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। 

৫. পাঠক জনপ্রিয়তার শীর্ষে উপন্যাস, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বইয়েও আগ্রহ

সাম্প্রতিক সময়ে পাঠকদের মধ্যে উপন্যাসের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া, জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থান সম্পর্কিত বইগুলোও জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। 

৬. মব জাস্টিস-চাঁদাবাজি-হত্যা আগের চেয়ে কমেছে: সেনা সদর

সেনা সদর থেকে জানানো হয়েছে, মব জাস্টিস, চাঁদাবাজি এবং হত্যার ঘটনা পূর্বের তুলনায় কমেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে এই উন্নতি হয়েছে। 

৭. স্ত্রীসহ সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকের নামে দুদকের ২ মামলা

দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক এবং তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দুটি মামলা দায়ের করেছে। তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। 

৮. দুদকের অভিযান: বাংলা একাডেমিতে নিয়োগে স্বজনপ্রীতির প্রমাণ

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযানে বাংলা একাডেমির নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বজনপ্রীতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

৯. অপারেশন ডেভিল হান্ট: আরও ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট অভিযানের অংশ হিসেবে আরও ৫২৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযানটি সন্ত্রাস ও অপরাধ দমনে পরিচালিত হচ্ছে। 

১০. বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন: নতুন ছাত্রসংগঠনের উদ্যোগ একাংশের

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অংশ হিসেবে নতুন একটি ছাত্রসংগঠন গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে, এই উদ্যোগটি আন্দোলনের একাংশের পক্ষ থেকে এসেছে। 



 আজকের (১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) বাংলাদেশের প্রধান সংবাদ শিরোনামগুলো  

রাজনীতি:

  • ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিচার নিয়ে বিতর্ক: সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত অ্যাডভোকেট তৌফিকা করিমের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।  

অপরাধ:

  • ৮ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ: শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে ৮ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।  অর্থনীতি:
  • বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে জাপানের প্রতি আহ্বান: বাণিজ্য উপদেষ্টা বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য জাপানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।  
            • পরিবেশ:
  • প্রকৃতি সংরক্ষণের উদ্যোগ: পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বোটানিক্যাল গার্ডেনের মাধ্যমে প্রকৃতি সংরক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।  

প্রযুক্তি:

  • পাঁচ প্রতিষ্ঠানের এনআইডি তথ্য ফাঁস: নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষসহ পাঁচটি প্রতিষ্ঠান তৃতীয় পক্ষের কাছে এনআইডি তথ্য ফাঁস করেছে।  

উল্লেখ্য, উপরোক্ত সংবাদ শিরোনামগুলো বিভিন্ন বিশ্বস্ত সূত্র থেকে সংগৃহীত এবং বর্তমান সময় অনুযায়ী হালনাগাদ করা হয়েছে।

আমাদের সমাজের বাস্তবতা

আমাদের সমাজের বাস্তবতা


আজকের এই সংখ্যার প্রচ্ছদে তুলে ধরা হয়েছে সমাজের সেই প্রতিচ্ছবি, যেখানে উজ্জ্বল স্বপ্নের পাশাপাশি অদৃশ্য সংগ্রাম, প্রত্যাশা ও বাস্তবতার কাহিনী লুকিয়ে রয়েছে। আধুনিকতার ঝলক, প্রযুক্তির স্নিগ্ধ আলো এবং উন্নয়নের উচ্ছ্বাসের মাঝে, আমাদের সমাজের গভীরে যে নানান দিক বিরাজমান – তা তুলে ধরা হয়েছে এক নিষ্পাপ প্রশ্নবিদ্ধ চিত্রে।

লেখক তৌফিক সুলতান স্যার এর লেখা সমূহ ||Writer Taufiq Sultan Sir's writings || Writer Towfiq Sultan Sir's writings ||كتابات الكاتب توفيق سلطان سير ||作家陶菲克·苏丹先生的著作 ||作家 Towfiq Sultan Sir の著作 ||Écrits de l'écrivain Towfiq Sultan Sir ||Yazar Towfiq Sultan Sir'in yazıları ||लेखक तौफीक सुल्तान सर की रचनाएँ || Al Towfiqi, Welftion CEO, আল তৌফিকী পরিবার, হাউজ অফ আল তৌফিকী, ওয়েল্ফশন নগরী,Welftion CEO,House Of Al Towfiqi, News,খবর,সংবাদ, লেখক, কবি,লেখা

কিছু মুহূর্তের প্রতিফলন:

  • উদ্বেগ ও উদ্যমের মিশেলে: আমাদের সমাজে পরিবর্তনের ধারাকে ছুঁয়ে চলছে তরুণদের উদ্দীপনা, যেখানে নতুন ধারণা ও সৃজনশীলতা প্রতিদিনই নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে।
  • আশা ও সংগ্রামের কাহিনী: প্রত্যেকের জীবনে রয়েছে অজানা কষ্ট ও সংগ্রাম, তবে সেই অন্ধকারের মাঝে যখন দেখা যায় এক নতুন সুর্যের আলো, তখনই হয় সমাজের পুনর্জাগরণের আশ্বাস।
লেখক তৌফিক সুলতান স্যার এর লেখা সমূহ ||Writer Taufiq Sultan Sir's writings || Writer Towfiq Sultan Sir's writings ||كتابات الكاتب توفيق سلطان سير ||作家陶菲克·苏丹先生的著作 ||作家 Towfiq Sultan Sir の著作 ||Écrits de l'écrivain Towfiq Sultan Sir ||Yazar Towfiq Sultan Sir'in yazıları ||लेखक तौफीक सुल्तान सर की रचनाएँ || Al Towfiqi, Welftion CEO, আল তৌফিকী পরিবার, হাউজ অফ আল তৌফিকী, ওয়েল্ফশন নগরী,Welftion CEO,House Of Al Towfiqi, News,খবর,সংবাদ, লেখক, কবি,লেখা

খেলাধুলা

খেলাধুলা কেবল প্রতিযোগিতা নয়; এটি একটি জীবনের রণভূমি, যেখানে শারীরিক ও মানসিক শৃঙ্খলা, দলবদ্ধতার মাধুর্য ও সহিষ্ণুতার বার্তা প্রতিফলিত হয়। ক্রীড়াঙ্গনে আজ তরুণদের উদ্দীপনা, নতুন রণকৌশল ও সাহসী দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে তৈরি হচ্ছে এক অনন্য ক্রীড়া সংস্কৃতি, যা সমাজের একতা ও স্বাস্থ্যসম্মত জীবনধারাকে উৎসাহিত করে।


লেখক তৌফিক সুলতান স্যার এর লেখা সমূহ ||Writer Taufiq Sultan Sir's writings || Writer Towfiq Sultan Sir's writings ||كتابات الكاتب توفيق سلطان سير ||作家陶菲克·苏丹先生的著作 ||作家 Towfiq Sultan Sir の著作 ||Écrits de l'écrivain Towfiq Sultan Sir ||Yazar Towfiq Sultan Sir'in yazıları ||लेखक तौफीक सुल्तान सर की रचनाएँ || Al Towfiqi, Welftion CEO, আল তৌফিকী পরিবার, হাউজ অফ আল তৌফিকী, ওয়েল্ফশন নগরী,Welftion CEO,House Of Al Towfiqi, News,খবর,সংবাদ, লেখক, কবি,লেখা


সারাদেশ

দেশের প্রত্যেক প্রান্ত থেকে তুলে ধরা হয়েছে আজকের বাস্তবতা, যেখানে শহর ও গ্রাম, মহানগর ও প্রত্যন্ত অঞ্চল—সব মিলিয়ে একটি সমবায়ের গল্প বলে।

  • উন্নয়নের নতুন অধ্যায়: আধুনিক প্রযুক্তি ও পরিবর্তিত চিন্তাধারা প্রতিটি কোণে প্রবেশ করছে, যেখানে দেশের প্রত্যন্ত প্রান্তেও উন্নতির সুর বাজে।
  • মানবতার মিলনস্থল: সমাজের প্রতিটি শ্রেণী, প্রতিটি প্রাণ—সবাই একসাথে মিলেমিশে গড়ে তুলছে একটি নতুন, সুশাসিত ও মানবিক সমাজের স্বপ্ন।

এই প্রচ্ছদ আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, সমাজের বাস্তবতা শুধু একটি ছবি নয়, বরং প্রতিদিনের ছোট ছোট পরিবর্তনের এক অনবদ্য সমাহার। খেলাধুলা থেকে শুরু করে সারাদেশের প্রতিটি কোণে যেখানে মানবতার অঙ্গীকার ও সংগ্রাম ফুটে উঠছে, সেখানে আমাদের প্রত্যেকের অবদান অপরিহার্য। আসুন, আমরা সবাই মিলে সেই নতুন দিনের স্বপ্নকে আরো সুদৃঢ় করে তুলি—একটি মানবিক, উদ্দীপনাময় ও সমৃদ্ধ সমাজ গড়ার লক্ষ্যে।

সোমবার, ফেব্রুয়ারী ১৭, ২০২৫

খেলাধুলায় বাংলাদেশ গৌরব, চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ

খেলাধুলায় বাংলাদেশ গৌরব, চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ

 

বাংলাদেশের খেলাধুলার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে ক্রিকেট, ফুটবল, তীরন্দাজি এবং ভারোত্তোলনের মতো খেলাগুলোর চিত্র ফুটে উঠেছে। এটি দেশের ক্রীড়া সংস্কৃতির প্রাণবন্ত দৃষ্টান্ত তুলে ধরে। 



খেলাধুলায় বাংলাদেশ: গৌরব, চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ

বাংলাদেশের ক্রীড়া সংস্কৃতি বহুমুখী ও সমৃদ্ধ। ক্রিকেট, ফুটবল, হকি, অ্যাথলেটিক্স থেকে শুরু করে নতুন উদীয়মান খেলা পর্যন্ত, সব ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজেকে প্রমাণ করার চেষ্টা করছে।

ক্রিকেট: সাফল্যের শিখরে বাংলাদেশ

ক্রিকেট বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। ১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফি জিতে ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পায় বাংলাদেশ। ২০০০ সালে টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর থেকে ধাপে ধাপে উন্নতি করেছে টাইগাররা। ২০১৫ ও ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি এবং ২০১৯ বিশ্বকাপে উল্লেখযোগ্য পারফরম্যান্সের মাধ্যমে বাংলাদেশ ক্রিকেট বিশ্বে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে।

ফুটবল: অতীতের গৌরব, বর্তমানের সংগ্রাম

একসময় দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের ফুটবল ছিল অন্যতম সেরা। ২০০৩ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে বাংলাদেশ ফুটবল দলের একমাত্র বড় আন্তর্জাতিক শিরোপা আসে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে পারফরম্যান্সের মান কিছুটা কমেছে, তবে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (BPL) মাধ্যমে ফুটবলের উন্নয়নের চেষ্টা চলছে।

হকি ও অন্যান্য খেলা

বাংলাদেশ হকিতে একসময় এশিয়ার অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল। তবে সময়ের সঙ্গে পারফরম্যান্সে অবনতি হয়েছে। বর্তমানে তরুণ খেলোয়াড়দের নিয়ে হকি ফেডারেশন উন্নয়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

অ্যাথলেটিক্স, কাবাডি, শ্যুটিং, আরচারি ও ভারোত্তোলনের মতো খেলাগুলোতেও বাংলাদেশ সময় সময় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সাফল্য দেখিয়েছে। বিশেষ করে, আরচারিতে রোমান সানা ও দিয়া সিদ্দিকীর মতো খেলোয়াড়রা দেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছেন।

বাংলাদেশের খেলাধুলার ভবিষ্যৎ

খেলাধুলার উন্নয়নে প্রয়োজন আধুনিক সুযোগ-সুবিধা, সঠিক প্রশিক্ষণ ও ক্রীড়া ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা। বিশেষ করে ফুটবল ও হকির মতো খেলাগুলোর পুনরুত্থানের জন্য বিনিয়োগ ও পরিকল্পিত প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে খেলাধুলার আগ্রহ বাড়ানো গেলে বাংলাদেশ বিশ্বমঞ্চে আরও বড় সাফল্য পেতে পারে।

বাংলাদেশের ক্রীড়াক্ষেত্র চ্যালেঞ্জের মুখে থাকলেও, সম্ভাবনা অফুরন্ত। ভবিষ্যতে পরিকল্পিতভাবে এগোতে পারলে ক্রিকেটের মতো অন্যান্য খেলাতেও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ নতুন ইতিহাস গড়তে পারবে।

রাজধানী ঢাকায় আজকের খবর

রাজধানী ঢাকায় আজকের খবর

 ওয়েল্ফশন নিউজ আপডেট



আজকের রাজধানী খবর

ঢাকা, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫:
রাজধানী ঢাকায় আজকের খবরের মধ্যে নানা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ও ঘটনা প্রবাহ রয়েছে। প্রতিদিনের মতো আজও শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে চলছে নানা উন্নয়ন কার্যক্রম এবং সামাজিক অবস্থা সম্পর্কে খবর পরিবেশন করা হচ্ছে।

১. ঢাকা শহরের পরিবহন সংকট
রাজধানী ঢাকায় ট্রাফিক জ্যাম এখনো একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে কর্মদিবসে অফিস ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সময়ে সড়কগুলোতে যানজট সৃষ্টি হয়, যা সাধারণ জনগণের জন্য অস্বস্তিকর হয়ে থাকে। তবে, সিটি করপোরেশন ও পরিবহন মন্ত্রণালয় ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা উন্নত করার জন্য নতুন প্রকল্প গ্রহণ করেছে।

২. শিক্ষাক্ষেত্রে নতুন উদ্যোগ
ঢাকা শহরে শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় আগামী মাসে ঢাকার কিছু এলাকায় আধুনিক শিক্ষা প্রযুক্তি চালু করতে যাচ্ছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন ডিজিটাল ক্লাসরুম ব্যবস্থা চালু করা হবে।

৩. স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় উন্নয়ন
রাজধানী ঢাকার হাসপাতালগুলোতে নতুন উন্নয়ন প্রকল্প চালু করা হচ্ছে, যাতে স্বাস্থ্যসেবা আরও উন্নত এবং সহজলভ্য হয়ে ওঠে। সরকারি হাসপাতালগুলোতে সেবার মান বৃদ্ধি করতে নতুন প্রযুক্তি এবং প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে।

৪. পরিবেশ সংরক্ষণে নতুন উদ্যোগ
ঢাকা শহরের পরিবেশ রক্ষায় নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর। শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে গাছপালা লাগানোর জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাপক কর্মসূচি চালানো হচ্ছে। এর মাধ্যমে নগরীর দূষণ কমানো এবং প্রকৃতির সঙ্গে শহরের সামঞ্জস্যপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করার লক্ষ্যে কাজ চলছে।

৫. ক্রীড়া ও সংস্কৃতি
আজ ঢাকা শহরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে একটি জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, যেখানে বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নিচ্ছে। এছাড়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ঢাকার তরুণ শিল্পীরা তাদের অভিনয়, সংগীত ও নৃত্য পরিবেশন করবে।


বুধবার, এপ্রিল ২৪, ২০২৪

কক্সবাজারের আনন্দ ভ্রমণ

কক্সবাজারের আনন্দ ভ্রমণ

ঈদের ছুটিতে কক্সবাজার ভ্রমণ:ছুঁয়ে এলাম সমুদ্র জল!

অফিস থেকে বাসায় ফিরে দেখি ত্বহা বাবু আর তুবা মনি মহা উৎসাহে টিভি দেখছে। পিঠাপিঠি ভাই বোন ওরা। ত্বহাবাবুর বয়স পাঁচ বছরে পড়েছে, নীলফামারিতে আমাদের কর্মস্থলের পাশে একটি স্কুলে ভর্তি করিয়েছি ওকে। আর তুবা মনির বয়স হলো একুশ মাস। ত্বহা শুধু প্রশ্ন করে, প্রচুর কৌতূহল সব বিষয়ে। অস্পষ্ট কিছু শব্দ সেও উচ্চারণ করতে পারে।

ডিসকভারি চ্যানেলে তখন উন্মুক্ত সমুদ্রের মধ্যে কয়েটা ডলফিন সাঁতার কাটছিল। ঢেউ গুলো সমুদ্রের পাড়ে এসে আছড়ে পড়তে দেখে ত্বহা বাবু বলে উঠলো বাবা সত্যিকারের সমুদ্র কেমন হয়? আমি বললাম সমুদ্র এমনই হয় বাবা। তুমি দেখবে? ওর মা কথার প্রায় মাঝখানেই বলে উঠলো চলো এবার সমুদ্রের পাড়ে ঈদ করি আমরা। কি ত্বহা বাবু! বাবাকে বলো এবার ঈদের ছুটিতে আমাদের কক্সবাজার নিয়ে যেতে ! তা হলেই তো তুমি সত্যিকারের সমুদ্র দেখতে পাবে। কথাটা অবশ্য মন্দ বলো নি, এবার ঈদে তাহলে কক্সবাজারই ঘুরে আসা যাক বেশ জোরেশোরেই বলে উঠলাম আমি। আমরা স্বামী স্ত্রী দু জনই কর্মজীবী। চাকরি জীবন যেমন হয় আরকি, অফিস থেকে বাসা আর বাসা থেকে অফিস। একদম গৎ বাঁধা সবকিছু । ভাবলাম এর মধ্যে একটু ঘোরাঘুরির সুযোগ পেলে সেটা আমাদের নেয়াই উচিত। বাচ্চাদের সাথে নিয়ে সুন্দর কিছু সময় তো উপভোগ করা যাবে অন্তত! সব মিলিয়ে তখনই সিদ্ধান্ত হলো ঈদ এবার কক্সবাজার করব আমরা।
সবাই মিলে ঈদ ঘোরাঘুরি 

আমার ছোট মামাতো বোন কক্সবাজার জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স। কল দিলাম বোন জামাইকে,উনি তো মহা খুশি। বললেন বড়ভাই আমরা বেশ কবছর ধরে এখানে আত্মীয় স্বজন ছাড়াই ঈদ করি। আপনারা আসলে তো খুবই ভাল লাগবে। বোনকে বললাম আসছি তাহলে এবার সামুদ্রিক মাছ আর শুটকি কিনে রেডি থাকো তোমরা!


নীলফামারী থেকে কক্সবাজার অনেক দূরের পথ। তাছাড়া রোজা রেখে বাচ্চাদের নিয়ে বাস বা ট্রেনে ভ্রমণ কষ্টদায়ক হবে। তার ওপর আবার ঈদের সময় টিকেট পাওয়ার ঝক্কিঝামেলা বেশি। তাই উড়ো জাহাজে যাওয়ার চিন্তাভাবনা করছিলাম। পরের দিন খোঁজ নিয়ে জানলাম, সৈয়দপুর বিমানবন্দর থেকে কক্সবাজার সরাসরি সপ্তাহে দুটি করে ফ্লাইট আছে। দেরি না করে বুকিং করে ফেললাম আমাদের যাওয়া আসার টিকেট।


 

নির্ধারিত দিনে সৈয়দপুর বিমান বন্দরে পৌঁছে দেখি আমাদের ফ্লাইট পিছিয়েছে ঘন্টা খানেক।৷ কী আর করা, বসে থেকে রানওয়েতে উড়ো জাহাজের ওঠা নামা দেখে আর বাবুদের সাথে নিয়ে পায়চারি করতে থাকলাম। অবশেষে আসলো আমাদের সময়। সৈয়দপুরের রানওয়ে যখন আমরা ছাড়লাম তখন বেলা সাড়ে বারোটা। নীল আকাশ আর সাদা মেঘের মধ্য দিয়ে ঘন্টা দেড়েক ওড়ার পরে নিচে হঠাৎই সমুদ্রের দেখা মিললো। সাথে এয়ার হোস্টেজের সুমিষ্ট কন্ঠ, আমরা কক্সবাজার বিমান বন্দরে নামতে চলেছি এই বার্তা।
আমরা তাহলে চলেই এলাম কক্সবাজার!
কি আনন্দ আমরা সমুদ্রে 
 

বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে একদম সোজা বোনের বাসায়। তখন সময় দুপুর আড়াইটার মত। ত্বহা বিমান থেকে নামা অব্দি নাহলেও দশবার বলেছে, বাবা সমুদ্র কই,বাবা বাবা.. সমুদ্রে চলো...!!


বাসায় পৌঁছার পর ওরা দুজন আমার বোনের মেয়ে তাসনিয়ার সাথে খেলতে শুরু করল। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে বোনকে বুঝিয়ে বললাম যে আমরা একটা হোটেলে উঠব। কারণ বাসায় থেকে ভ্রমণের প্রকৃত স্বাদ পাওয়া যাবে না। অনেক কষ্টে বোনকে রাজি করানো গেল।

 বোনজামাই শহিদুল ভাই সহ গেলাম হোটেল খুঁজতে। আমরা রুম পেলাম লাবনী আর সুগন্ধা পয়েন্টের মাঝামাঝি রাস্তার পাশের একটি হোটেলে। লাগেজ পত্র নিয়ে রুমে উঠার পর সবাই মিলে সুগন্ধা পয়েন্টে গেলাম সমুদ্র দেখতে। একে তো রোজার মাস তার ওপরে আবহাওয়া গরম, শরীর বেশ ক্লান্ত লাগছিল। তবে বিচের কাছাকাছি এসে বেশ ভালই লাগল। রোজার জন্যই হয়ত সমুদ্র পাড়ে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় নেই এখন।

সমুদ্র সৈকতে বালুর প্রাসাদ তৈরির শুরু 


কি বিপুল জলরাশি! ছোট-বড় ঢেউগুলো এসে আছড়ে পড়ছে পরিষ্কার ভেজা বালুর ওপর। ত্বহা প্রথম বার সমুদ্র দেখে বেশ অবাক হয়েছে। আর তুবা মনি ভয় পাচ্ছে কিছুটা। তবে ওদের মায়ের চোখেমুখে বেশ উচ্ছ্বাস দেখলাম। সব মিলিয়ে প্রথম বার সমুদ্র দেখাটা বেশ উপভোগ করেছিলাম আমরা।

আসল ঘোরাঘুরি শুরু হয়েছিল ঈদের দিন থেকে। নামাজ পড়লাম কক্সবাজার স্টেডিয়ামের সামনের প্রধান ঈদ গাহে। তারপর হোটেল থেকে বোনের বাসায় গিয়ে সবাই মিলে সেমাই মিষ্টিমুখ করার পর সিদ্ধান্ত হলো মহেশ খালী দ্বীপে ঘুরতে যাওয়ার। 


স্পিডবোট যখন আমাদের মহেশ খালী নামিয়ে দিল তখন সরু প্যাসেজের মত লম্বা জেটিটা চোখে পড়ল। আশেপাশে কেউড়া, গোল পাতার মত ম্যানগ্রোভ জঙ্গল। এটা কি সুন্দরবন নাকি?বলে উঠলাম আমি, বোনজামাই বলল না ভাই তবে কিছুটা সুন্দর বনের ফিল নিয়ে নেন, এক ভ্রমনে দুই ফ্লেভার আরকি! মুচকি হেসে সামনের দিকে পা বাড়ালাম আমরা। মহেশখালীতে শুটকি আর লবণের ঘের দেখলাম। ঝাউবন,আর বেশ কিছু মন্দিরও দেখেছিলাম। বিকেলের দিকে বোনের বাসায় ফিরে আরেকপ্রস্থ খাওয়া দাওয়া হলো। রুপচাঁদা মাছ, চিংড়ি মাছ, শুটকি ভর্তা আরো দুই এক রকম তরকারি করেছে আমার বোন। খেতে খেতে পরদিন কোথায় যাওয়া যায় সেই বিষয়ে আলাপও করা হলো।বোনজামাই বলল হিম ছড়ি মেরিন ড্রাইভ এবং ইনানি বিচ ঘুরতে হবে, ঐদিকটায় মিনি বান্দরবন, রেজুখাল আর এই দিকে ফিশওয়ার্ল্ড এই কয়টা জিনিস আপনাদের দেখতেই হবে বড়ভাই।আমি বললাম হু তাহলে কালকে চলেন হিমছড়ির ঝর্ণা দেখে আসি।

মাছটাতো বেশ স্বাদ হয়েছে সালমা,তা আর কি কি মাছ খেয়েছ তোমরা এখানকার ? খেতে খেতে বোনকে বললাম আমি। আরো অনেক মাছ আছে ভাই তোমরা আরো কটা দিন থাকো তাহলে একে একে সব মাছ খেয়ে যেতে পারবে। এই কয় দিনের সেহেরি ইফতার সব আমার বোন পাঠিয়েছে,অর্থাৎ আমরা থেকেছি হোটেলে কিন্তু প্রতি বেলার খাবারই পাঠিয়েছে ওরা। বোনগুলো এমনই হয় হয়ত।

সমুদ্র সৈকতে বালু দিয়ে আঁকাআকি করছে দুইটি শিশু 


সেদিন সন্ধ্যায় সুগন্ধা পয়েন্টের রাস্তায় আমরা মাছ ভাজা খেতে গেলাম। এখানে ছোট ছোট ভ্যানে করে কাঁকড়া, অক্টোপাস, লবস্টার, চিংড়ি ফ্রাই, বারবিকিউ করে বিক্রি হয় রাস্তার পাশে। কাঁকড়া, স্কুইড ,লবস্টার আর কয়েকটা মাছ খেয়েছি আমি। ত্বহা বাবু আর তুবামনি কাঁকড়া খেয়েছে তবে ওদের মা শুধু স্কুইডের ফ্রাই খেয়েছে দু একটা। কাঁকড়া দেখে নাকি ওর ভয় ভয় লাগে!


ঈদের পরের দিন সকালে আমরা বের হলাম হিম ছড়ি পাহাড় আর ঝর্ণা দেখতে। অটোতে করে যখন মেরিন ড্রাইভ রোডে ঢুকলাম তখন মনে হলো এটাই কক্সবাজারের সবচেয়ে সুন্দরতম স্থান। রাস্তার একপাশে সমুদ্র অন্য পাশে পাহাড়। কিছু কিছু স্থানে তো সমুদ্র একদম রাস্তার কাছাকাছি। বালুর ওপরে রাখা সাম্পান, জলের ঢেউ, বাতাস, ঝাউ গাছ, পাহাড় আর গাছ পালার ঝোপঝাড় মিলিয়ে অসাধারণ প্রাকৃতিক শোভার মধ্য দিয়ে আমরা পৌঁছুলাম রেজুখাল সংলগ্ন কক্সবাজারের মিনি বান্দরবানে। আমরা পাহাড়ে উঠতে শুরু করলাম। ত্বহা বাবু উপরে উঠে ভালই মজা পেয়েছে বলে মনে হলো। একটু পর পর বলছে বাবা পাহাল পাহাল,ও মাঝে মাঝে "র"এর উচ্চারণ করতে পারে না। তাই পাহাড় কে পাহাল শোনাচ্ছিল। আমরা কিছুক্ষণ বসে ছবি তুলে চলে আসলাম হিম ছড়ি। টিকেট কেটে ঢুকে হাতের ডান পাশে পড়বে ঝর্ণা। বেশ কিছু লোক সমাগম হয়েছে দেখলাম। সব সময়েই নাকি এমন পর্যটক থাকেন এখানে।ঝর্ণা খুব বেশি একটা বড় না, তবে দেখতে সুন্দর আছে। ঝর্ণার পানি হাতে নিয়ে তুবা মনির গালে ছিটিয়ে মজা করলাম কিছুক্ষণ। এবার পাহাড়ে ওঠার পালা, সবাই পাহাড়ের গায়ে লম্ব ভাবে দেয়া সিড়ি বেয়ে উঠতে শুরু করলাম। অনেকগুলো সিঁড়ি ভেঙে যখন আমরা পাহাড় চূড়ায় পোঁছালাম তখন প্রায় বিকেল। সূর্য হেলে পড়েছে পশ্চিম আকাশে। ওপর থেকে সমুদ্রের জলে সূর্যের আলোর অপূর্ব খেলা দেখলাম আমরা। সবাই বেশ হাঁপিয়ে উঠেছিল। খানিকক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে নিচে নেমে পড়লাম।

বাবা মেয়ের ঈদ 

ইনানি সৈকতটা বেশ নিরিবিলি, তার একটু সামনে গেলেই একটি কাঠের সেতু ও ঝাউবন দেখা মিললো । আমার বোনটা বলল ভাইয়া এই জায়গায় যাই চলেন। ঝাউবন, কাঠের সেতু তার বিপরীতে বড়সড় একটা পাহাড়। নির্মল বাতাসে এখানে মন হারিয়ে যাওয়ার মত আবহাওয়া। ত্বহা তুবা, আর আমার বোনের মেয়ে তাসনিয়া নিচে নেমে ঝাউ বনের মধ্যে দৌড়াদৌড়ি আর খুনসুটি করল কিছুক্ষণ। আমরা বসে দেখছিলাম ওদের।

ঝাউবন থেকে ফেরার পথে দেখলাম প্যারাসেলিং। ঐতো প্যারাশুট দড়ি বেঁধে উড়া উড়ি আরকি। বাচ্চারা প্যারাসেলিং দেখে বেশ মজা পেল মনে হলো, অবশ্য আমাদেরও ভালই লাগছিল দেখতে।

পরের দিন যাওয়া হয়েছিল ফিশ ওয়ার্ল্ড দেখতে। কত বিচিত্র ধরনের মাছ যে আছে ওখানে না গেলে বুঝা যাবে না। কাঁচের একুরিয়াম পুরো ঘর জুড়ে তার ভেতরে ঘুরে বেড়াচ্ছে জীবন্ত হাঙ্গর, কচ্ছপ আর নানান সামুদ্রিক জীব। বেশ মনোমুগ্ধকর লেগেছে এই ফিশ ওয়াল্ড।

পাহাড় সমুদ্রের মাঝে ওদের দুষ্টুমি 

সমুদ্র পাড় হতে ঈদ মোবারক 

ঘুরাঘুরি মাঝে সমুদ্র সৈকতে সবাই এক রংয়ের পোশাকে বেশ কিছু ছবি তুলেছিলাম আমরা। আর সৈকতের সামনে দোকানগুলো থেকে কেনা হয়েছিল আচার, শামুক ও মুক্তার মালা। শুটকি কিনেছিলাম কিছুটা,মহেশ খালি থেকে কিনেছিলাম পাহাড়ি পোশাক আর চন্দন। 

পরের দিন সকালে আমাদের ফিরতি ফ্লাইট। রাতে তাই শেষ বারের মত সমুদ্র দেখতে গেলাম আমরা। সমুদ্র সৈকতে ত্বহা বাবুকে নিয়ে ঘোড়ায় উঠলাম আর ও ঘুড়ি কিনে চাইলে ওকে ঘুড়ি কিনে দেয়া হলো। শেষ দিন তাই সৈকতে মধ্যে বসে বালু দিয়ে রাজপ্রাসাদ বানানোর অনুমতিও মিলল আরেকবার।


দুপুর বারোটা নাগাদ বোন দের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমরা পোঁছালাম কক্সবাজার বিমান বন্দরে। এবার অবশ্য যথা সময়েই এলো আমাদের বিমান। ওঠার আগে এই কয় দিনে দেখা সকল স্মৃতিগুলো অকপটে আরেকবার চোখের সামনে ভেসে উঠলো। কালকে থেকেই আবার নিয়মিত জীবন শুরু তবে এই ভ্রমণের স্মৃতি আমাদের থেকে যাবে আজীবন। মাঝে মাঝে সময় পেলে এমন ভ্রমণে বেরিয়ে পড়ব। বেশ সতেজ শরীর ও মন নিয়ে সৈয়দপুরের উদ্দেশ্যে উড়ে চললাম আমরা।
-নুরুল্লাহ কামিল।
wushukamil621@gmail.com
মুঠোফোন :01778117147



বুধবার, জানুয়ারী ১০, ২০২৪

সুন্দরবনের অঞ্চলে এক নিম্মমধ্যবিত্ত ঘরে জন্ম নিলো এক শিশু

সুন্দরবনের অঞ্চলে এক নিম্মমধ্যবিত্ত ঘরে জন্ম নিলো এক শিশু

কর্ণফুলীর ঘাট

-রাজিন হাসান রাজ



সালটা ১৯৭২,
১৯ ডিসেম্বর,
আর ১০ টা দিনের মতই যাচ্ছিলো দিন টা।এমন সময় সুন্দরবনের অঞ্চলে এক নিম্মমধ্যবিত্ত ঘরে জন্ম নিলো এক
শিশু। গায়ের বর্ণ অত্যাধিক কালো থাকায় তার বাবার মুখ থেকে বের হয়ে গেলো কালু। সেই থেকে তার নাম রাখা
হলো কালু।যদিও ভালো নাম মাফি।শরীরের বর্ণ কালো হওয়া সর্ত্বেও তার চেহারার যে আশ্চর্য মায়া সেইটা সে যত বড়
হতে থাকল তত তার মুখে ফুটে উঠতে থাকলো। তার ৭-৮ বছরে অপরিচিত তাকে দেখে তার নাম শোনেনি বা কাছে
ডাকেনি এমন খুব কম মানুষ ই ছিলো। সে যেমন ই হোক, এখনো যুদ্ধবিদ্ধস্ত থেকে নাম সরাতে পারেনি
বাংলাদেশ। এদিক ওদিক করে কোনো রকমে সংসার চলছিলো তাদের কারন বাবা যে চাকরি হারিয়েছেন
মুক্তিযোদ্ধা দের খাবার দেয়ার জন্য। এর মাঝেই পরিবারের নতুন অতিথি হাজির। তাতে তেমন একটা
বিচলিত না হলেও মাফির বাবা সিদ্ধান্ত নিলো সে মাওয়ালী দের সাথে মধু আহরণে যাবে বনের দিকে। প্রথম
প্রথম সবাই মানা করলেও জীবনের তাগিদ এ এটা সবার মেনে নিতেই হলো। মাফি তার বাবার দ্বিতীয়
সন্তান তার একটা বড় ভাই ও আছে যার নাম রাফি। মাফি হবার সময় সে তার বাবার সাথেই ছিলো বরংচ
মাফি নামের থেকে কালু নাম ধরে ডাকতেই যেনো রাফি বেশি সাচ্ছন্দ বোধ করত। ৬ বছরের ছোট মাফি কে
খুব ই ভালোবাসত রাফি।
মাফি বড় হয়ে স্কুলে যাওয়া ও শুরু করে রাফির সাথে। সব ই ঠিক চলছিলো। হঠাৎ একদিন ঘটল এক অঘটন
রাফি ও মাফি সবে স্কুল থেকে ফিরেছে। এসে শুনতে পেলো যে তার বাবারা ৪ জন তাদের বনে গিয়েছিলো
তাদের সবার উপর বাঘ আক্রমণ করেছে।২ জন মারা গেছে তার মাঝে রয়েছে মাফির বাবা ও ।মাফি ঠিক ভাবে
বুঝতে না পারলেও রাফি ঠিকই সব বুঝে ফেলল। অঝরেই কানছে সে। তাদের মা ও যেনো থামতে চাইনা
কোনো মতে এদিকে অবুঝ মাফি তখনো ঠাওর করে উঠতে পারছে না আসলে এরা কি করছে।
কয়েকদিন পর টানাপড়ন লাগলো সংসারে। ২বেলা খাবার জুটানো ও দায়। এমন সময় মাফির দুরসম্পর্কের
খালা তাদের বাড়ি আসলো। তাদের অবস্থা দেখে মাফির মা কে বললো”আপা তুই আমার সাথে চাটগাঁও
চল।ওহানে আমি যে কাম করি তরেও নিয়া নিবোনে মালিক রে কইয়া। আর এই রাফি ও ত বড় হইছে ওর ও
এক ব্যাবস্থা আমি করমুনে। তুই চল আমার সাথে।” ইচ্ছা না থাকা সত্তেও যেতে হলো তাদের বন্দর নগর
চট্টগ্রাম।
চট্টগ্রাম যেয়েই কাজ পেলো মাফির মা। মাফি তার মায়ের সাথে থাকতে পারলেও রাফি থাকতে পারলনা
তাদের সাথে। রাফির স্থান হলো কর্ণফুলীনদীর ধারে ঘাটে। বন্দর এর জাহাজের হিসাব নিকাশ রাখে সে।খুব
বড় কাজ সে করেনা কারন বয়স ত তার খুব বেশি না।

কয়েক বছর পর, ১৩ বছর বয়স হলো মাফির এখন অনেকটায় বড় সে। কিন্তু বদলে গেছে তার সকল চিন্তা
ধারা। সরল মায়ারুপী মাফির মনে এখন অনেক মন্দচিন্তা কাজ করে।এটা মূলত তার একা থাকার ফল। মা
সকালে যাই রাতে আসে মাফি কি করল কি খেলো এটা নিয়ে ভাবার খুব একটা সময় মাফির মা পাইনা।
বেশিভাগ সময় ই মাফি ঘুমানোর পর তার মা আসে আর সে ঘুম থেকে ওঠার আগেই তার মা চলে যাই।
এতদিনে ভালোই বন্ধু বানিয়েছে মাফি। মা আর ভাই এর টাকার সুবাদে লেখাপড়া এক ছোট স্কুলে তার
চলছিলো। কিন্তু নানারকম উদ্ভট কারনে তাকে প্রায় ই বিভিন্ন শাস্তির সম্মুখীন হতে হয়। এই ধরেন
একদিন এক বব্ধুর নাক মুখ সে বেধে রাখলো। তার বন্ধুও সরল মনে তার কাজে সাহায্য করলো সবাইকে সে
বললো এক ধরনের খেলা খেলার জন্য সে এমন করছে। পরে জানা যাই মাফি আসলে জানতে চেয়েছিলো নাক
মুখ বন্ধ রাখলে কতক্ষন একজন বেচে থাকতে পারে। বুঝতেই পারছেন এর পরিনাম নিশ্চিত মৃত্যু ছাড়া কিছু
হতে পারত না। আবার একদিন এক বন্ধুর মাথার পিছনে আঘাত করে দেখলো সত্যি সত্যি মাথায় আঘাত
করলে অজ্ঞান হয় কিনা। সেযাত্রায় কেও আশেপাশে না দেখায় তাকে কেও সন্দেহ করেনি। কিন্তু যার
মাথায় আঘাত করেছিলো তার অবস্থা ছিলো গুরুতর। যত দিন যাই মাফি যেনো তত পাগলামি করতে থাকে।
তার এই পাগলামি বাড়তেই থাকে।
এরপর ঘটে গেলো আরেক অঘটন। কাজ করে আসার সময় সড়ক দূর্ঘটনায় প্রাণ গেলো মাফির মায়ের। মাফি
তখনো তেমন কিছুই উপলব্ধি করতে পারেনি যতক্ষন না ওর খাবার আর প্রতিদিন কার চালচলনে পার্থক্য
আসল। এরপর যেনো মাফির পাগলামি আরো দ্বিগুন বেড়ে গেলো। রাফি অনেক কষ্টে হলেও মাফির স্কুলের
খরচ চালাচ্ছিলো। কিন্তু হঠাৎ একদিন রাফিকে স্কুল থেকে ডেকে পাঠালো। রাফি যেয়ে দেখলো মাফি
প্রধান শিক্ষক এর কক্ষে এক কোনায় দাঁড়িয়ে আছে আর একটা লোক উদ্যস্ত হয়ে এগিয়ে যাচ্ছে মাফি কে
মারার জন্যে। রাফি জিজ্ঞেস করলে জানা গেলো আজ সে আরেক বন্ধু কে মেঝে তে শুইয়ে দিয়ে তার বুকের
উপর উঠে লাফ দিছে ফলে মাফির বন্ধুর বুকের পাজরের হাড় ভেঙে গেছে। গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নিতে
হয়েছে তাকে। যার ফলস্বরুপ মাফিকে স্কুল থেকে বের করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। রাফি খুব অনুনয়
বিনয় করলেও কোনো কাজ হলো না। মাফি কে স্কুল থাকে বের করে দিলো।রাফি ও ওইদিন খুব রাগ করলো
মাফির উপর। মাফি কে আর স্কুলে পাঠাবে না বলে সিদ্ধান্ত ও নিলো।
রাফি মাফিকে তার ঘটের মালিকের কাছে নিয়ে গেলো যেনো তিনি মাফিকে একটা কাজ দেন। রাফি অনেক
ভালো ছেলে হওয়ায় রাফির কথায় মালিক মাফি কে একটা কাজ দিলো সেটা হলো ঘাটের নৌকার যাত্রীদের
থেকে টাকা আদায় করা।মাফি ও কোনো সমস্যা না করে কাজ করতে থাকলো। কিন্তু প্রতিদিন ই কিছু
পরিমানে টাকা সে সরিয়ে রাখত। সেই টাকা দিয়ে মাফি ও তার আশে পাশের ছেলেরা নেশা জুড়ে দিত। ১৫ বছর
বয়সেই নেশার দুনিয়াই গেলো সে। তবে সেই টাকা চুরির বিষয় টা ও আর গোপন থাকল না। মালিকের কাছে
হাতে নাতে ধরা খেলো। অনেক মারল সেদিন মালিক মাফিকে। এমন মার মাফি তার জীবনে কখনো খাইনি । সে
মনে মনে মালিক যে খুন করার চিন্তা করল। মালিক তখন মাফিকে ঘাট থেকে বের করে দিলেন। মাফি খুব
চেষ্টা করল মালিক কে মারার কখনো ছুরি নিয়ে চুপিসারে যেতে গিছে আবার মালিকের গাড়ির টায়ারে পেরেক
পুতে রেখে গুলতি দিয়ে মালিক কে মারার অনেক প্রচেষ্টা সে করেও বিফল। এদিকে রাফির অনুরধে মাফির
আবার কাজের ঠিকানা হলো সেই ঘাট। কাজটা এবার ভিন্ন পাথর বোঝাই নৌকার হিসাব রাখা টাই হলো
এখানে মুল কাজ। এদিকে মালিক তেমন আসেও না আর এখান থেকে টাকা চুরির সম্ভাবনাও নেই তাই ভেবে
মালিক এই কাজ দিলেন মাফি কে। তাই বলে মাফির মন থেকে মালিক কে খুন করার কথা যায়নি।
নতুন কাজে যোগ দিলেও মাফির বুদ্ধির কাছে হার মানতে হতো সবাইকে। একে একে মাফির সাথে কাজ করা
অনেকেই কাজে যাওয়া বন্ধ করতে লাগলো কারন মাফি থাকাকালীন তাদের কোনো কাজ করতে হতোনা
বললেই চলে। মাফি ও এর একটা সুবিধা নিলো। যখন কেও থাকেনা তখন মাফি নৌকার হিসাব করেনা। যেমন
যদি ৫ টা নৌকা ঘাটে আসে সে ৩ টা নৌকার হিসাব দেই বাকি ২ টা নৌকার পাথর সে নিজের গোপন জায়গায়
রাখার ব্যাবস্থা করে সেখান থেকে সে নিয়মিত বাজার মুল্যের থেকেও কম মুল্যে পাথর বিক্রি করে। এভাবে
জমতে থাকে মাফির টাকা। এভাবে চলতে চলতে সে নৌকা গোনার কাজ থেকে নিজে পাথর ব্যাবসায়ী তে নাম
লেখায়।

এবার ও ধরা পড়ে গেলো মাফি। তবে মালিকের কাছে না। এক কর্মচারির কাছে। নাম শহিদ মোল্যা। সে বুঝে
গেলো মাল চুরি হচ্ছে। আর সেই মাল বিক্রি করছে মাফি। আর তার থেকেই সে নাম লিখিয়েছে পাথর
ব্যাবসায়। শহিদ মোল্যা সোজা যাই মাফির কাছে। সব বলে সে এবার যে মালিক এর কাছে বলে তার
আজীবনের জন্যে চাকরি টা খাবে এটা মাফি খুব বুঝতে পারে। পিছনে ফিরে ২ পা এগোতেই পাথর দিয়ে শহিদ
মোল্যার মাথায় বড় এক পাথর দিয়ে আঘাত করে মাফি। বুঝে ওঠার আগে জ্ঞান হারায় শহিদ মোল্যা। কেও
নেই আর ঘাটের পাশে। কিন্তু একটা নৌকা আসছে তখন ঘাটের দিকে। সেদিকে খেয়াল গেলো মাফির কি
করবে বুঝতে পারছেনা সে। দ্রুত একটা পাথরের সাথে দড়ি বেশি শহিদ মোল্যার নিথর দেহের সাথে বেধে
খরস্রোতা কর্ণফুলীনদীতে ফেলে দেই মাফি। নদীগর্ভে চলে যায় শহিদ মোল্যার দেহ। এই প্রথম কাওকে
মারল মাফি। ভয়ে বুক কাপছে তার। নৌকা ঘাটে আসলো পাথর নামালো কিন্তু তেমন কোনো সমস্যা হলোনা
মাফির। নিজেই যতটুকু ভয় পেয়েছে ওইটুকুই। এদিকে সন্ধ্যায় বাড়ি যাওয়ার সময় দেখলো সবাই মিলে শহিদ
মোল্যাকে খুজছে একজন মাফির কাছে শুনলো শহিদ বুড়ো রে দেখছে কিনা মাফি মাথা নাড়িয়ে না বোধক
উত্তর দিয়ে বাসায় চলে গেলো।বাসায় এসে অনুতাপের থেকে বরং নিজের এমন কাজে আরো খুশি হলো মাফি।

এভাবে তার হাতে প্রাণ যাই জমির সরদার আর হাকিম মোল্যার। ব্যাবস্থা একটায় পাথর বেধে নদীর
গভীরে। খুনের পাশাপাশি নিজের অবৈধ ব্যাবসার খাতিরে সে গুছিয়ে নিলো তার নিজের এক দল। অপরাধমুলক
কাজে এগিয়ে যেতে থাকলো মাফি। এভাবে বাড়তে বাড়তে কিশোর দের নেতা হয়ে উঠলো মাফি। হবেই না বা
কেনো নিজের টাকায় কে ই বা এমন ভাবে অন্যের পিছে খরচ করে? এর মাঝে হলো আরেক কাহিনী কর্ণফুলী
এলাকার বড় চাদাবাজ মসিউল মাস্তান এসে গেলো মাফির কাছে চাদা নিতে বললো ”বহুত ফ্রি ফ্রি ব্যাবসা ত
করছস এবার মোর যে দাবী সেইডা পূরণ কর ত বাপ। ” কিন্তু মাফি চাদা দিতে রাজি হলো না। এভাবে কথা
কাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হলো। এদিকে হাতাহাতি দেখে মাফির সাথের কিশোর রা খেপে গিয়ে
এলোপাথাড়ি ছুরি মারল মসিউল কে। মসিউল বুঝে ওঠার আগেই তার নিথর দেহ লুটিয়ে পড়ল মাটিতে। মাফি
একটু মুচকি হাসলো আর বুঝলো এই ছেলেগুলো তার জন্যে সব করতে পারে। মাফির থেকে যেনো ওরাই সব
থেকেবেশি ভয় পেলো। মাফি অভয় দিলো আর বললো কিভাবে পাথর দিয়ে বেধে নদীতে ফেলতে হবে। ওরা তাই
ই করলো। এবার মাফির আত্মবিশ্বাস আরো বেড়ে গেলো। রাতারাতি সে বনে গেলো এলাকার চাঁদাবাজ দের
প্রধান। এক কথায় চাদাবাজ দের বাপ যাকে বলে আর কি।
 তবে মাফি নামের থেকে কালু ভাই নামে পরিচিত হলো মাফি বেশিই। রাফি সব সময় ই ত মাফি কে
কালু বলেই ডাকত। চাদাবাজ আর সন্ত্রাসী তে যেনো মাফি এখন একচ্ছত্র অধিপতি। তার ধারের
কাছে ঘেষার মত তেমন কেও নেই। এভাবে মাফির সাথে থাকা ছেলেরা শুরু করল ছিনতাই। মাফির
সাথে থাকা এক ছেলে নাম মনির ।মাফি তারে মনি বলেই ডাকত। একদিন এক লোকের থেকে ছিনতাই
করতে যেয়ে খুব আহত হয়। লোকটা ত ছিলো পুলিশ সিম্পল পোশাকে ছিলো কিন্তু কাছে ছিলো
পিস্তল। ছুরি গলাই ধরার সাথেই গুলি চালাই পুলিশ টা। মনির ও কম না ছুরি টা চালায় দেই গলায়।
শেষ! মুহুর্তেই মারা গেলো লোকটা। গুলিটাও যে মনিরের পেটের ভিতর দিয়ে গেছে খুব সুস্থ সে না।
এভাবেই কোনো ভাবে মাফির কাছে গেলো মনির।মাফি দেখেই বলে ”কিরে মনি তোর এমন হাল হলো
কিভাবে! কে মেরেছে তোরে এভাবে?” মনির বললো ”সে ও নেই যে কালু ভাই। হা হা হা...” বলেই
অজ্ঞান হয়ে গেলো মনির। মাফি মনির কে নিয়ে হাসপাতালে যেয়ে ভর্তি করল। আসার সময় মাফি
দেখলো রাস্তায় একটা দেহ পড়ে আছে। আর একটা ছুরি আর পিস্তল ছুরি দেখেই মাফির আর কিছু
বুঝতে বাকি নেই। নিজ হাতেই লাশ টার সে ব্যাবস্থা করল। পাথর বেধে নদীতে। এরপর মনি হয়ে
উঠলো মাফির এক আপন জনের মত। ভাই এর থেকেও কাছের মানুষ হয়ে গেলো মনির। এরপর
চাঁদাবাজি আর ছিনতাই এর দায়িত্ব পড়ল মনিরের উপর। এদিক টা সেই ই সামলায়। মাফির নজর
গেলো আরো উপরে। এবার তার নজর পুরো ঘাটের উপর। ঘাটের কাছে যেতেই মালিকের সাথে দেখা।
সালাম দিলো মাফি মালিক উত্তর না দিয়েই বলে উঠলো “এই শুয়ারের বাচ্চা, এখানে কি কাজ তোর?
আবার চুরির মতলব আছে নাকি! হা হা হা... ” মাফি হেসে বললো “অনেক হইছে মালিক বয়স ত কম
হইনি আপনের এবার ঘাট ছাড়েন আমাদের ও সুযোগ দেন” শুনে মালিক রাগান্বিত হলো আর দিলো
মাফির মুখে এক চড়। মালিকের সাথে থাকা লোক গুলো ও মারতে গেলো মাফিকে। এদিকে মনির আর


তার সংগীরা খেপে গেলো সবাই হাতের ছুরি বের করে রাখলো। কেও বুঝে ওঠার আগেই মাফি
পিস্তলবের করে গুলি চালিয়ে দিলো মালিকের মাথায়। ব্যাস কি দিয়ে কি হলো কেও বুঝে উঠলো না।
মনির ও হাক দিয়ে উঠে একে একে মালিকের সাথে থাকা সবাইকে ছুরি দিয়েই মেরে ফেললো।
গুনে গুনে ২১ জন কে মেরেছে তারা। মাফি আর মনির দুইজন ই একটু মুচকি হাসলো। মনির আর তার সঙ্গীরা
জানত লাশগুলো কি করতে হবে তাই ই হলো। মাফি এখন ঘাট মালিক। মনিররা সবাই বলে উঠলো “মালিক।

আমাদের কালু ভাই। আমাদের মালিক। আমাদের ঘাট মালিক। ” সবাই বড় একটা চিৎকার দিলো মালিক
বলে।এভাবে ঘাটের সব অধিকার এখন মাফির। মাফির ভয়ে এলাকার কেও ই চোখ তুলে ও ঘাটের দিকে
তাকায়না। বরং সবাই মাফির নাম নিয়েই পুরো শহরে ব্যাবসা করতে থাকলো। ঘাট থেকে মাফি ধীরে ধীরে হয়ে
উঠলো পুরো শহরের কালু ভাই। মাফির সুবাদে রাফি কেও ভয় পেত সবাই। কিন্তু এদিকে রাফি সাধাসিধা
জীবন যাপন করে। বিয়ে করে ১ টি মেয়েও হয়েছে তার। এসব নিয়েই সুখে আছে সে। ঘাট মালিক কে মারার
খবর তখন পুরো শহর জুড়ে সেটা পৌছালো রাফির কানেও। রাফি ছুটে গেলো মাফির কাছে। রাফি অনেক
অনুনয় বিনয় করলো যেনো সে এসব বাদ দেই। কিন্তু কিছু হয়না। মাফি কারো কথায় শুনেনা। অবশেষ এ
মাফি রাফি কেও খুন করার হুমকি দিলো। রাফি কিছু করার নেই বুঝেই সেখান থেকে প্রস্থান করলো।
এদিকে লোকমুখে ছড়িয়ে পড়লো ঘাট মালিক এর কথা। পুলিশ এর এবার টনক নড়লো। পুলিশ এর একটি দল ও
নির্বাচন করা হলো। তারা নেমে পড়লো তথ্য বের করার জন্য। কিন্তু হায় এ কি একটা মানুষ ও মুখ খুললো
না। কেও ই মাফির বিরুদ্ধে কিছু বলতে রাজি নয়। পুলিশ পুরো নিরাশ হয়ে গেলো। এ সময় নান্নু মিয়া যে কিনা
সাবেক ঘাট মালিক এর ছোট ভাই সে রাজি হলো সাক্ষী দিতে। পুলিশ ও বসে বসে তার সাক্ষাত নিতে লাগলো।
কিন্তু এ কথা মাফির কান এ যেতে খুব সময় লাগলো না। মাফির কিছু বলার আগেই মনির উঠে চলে গেলো।
আবার খুন এবার জোড়া খুন পুলিশ সাক্ষী দুইটায়। লাশ দুইটা কোনো ক্রমে ঘাটে এনেই নদীতে পাথর বেধে
ডুবিয়ে দিলো তারা। তাদের সাথেই ডুবে গেলো সব প্রমান। এরপর থেকে মানুষের মনের অবস্থা আরো
ভয়ংকর । কেও বিন্দুমাত্র মুখ খুলতে চাইনা মাফির বিরুদ্ধে। পুলিশ এবার উঠে পড়ে লেগেছে প্রমান
সংগ্রহে কিন্তু ফলাফল শুন্য। এদিকে জাকির পেশায় সাংবাদিক একটা সাপ্তাহিক পত্রিকার সাংবাদিক সে।
সে সব বিষয় ই জানতে পারলো। সে বুঝতে পারলো সরাসরি মাফির বিরুদ্ধে লেখা কখনোই ভালো ফল হবেনা।
কিন্তু সে ও যে থেমে থাকার মত মানুষ না। অনেক বাঘা বাঘা মাস্তান ও তার কিছুই করতে পারেনি। কিছু না
বুঝেই সে রিপোর্ট করে ফেললো। কিন্তু সে ও বুদ্ধি করে কাজ করলো। পত্রিকার শিরোনাম দিলো “২৫ টি
মানুষ উধাও”। খবর সেটা ত আর মাফির আড়াল হয়নি। মাফি পাঠালো মনির কে। মনির যেয়ে দেখলো জাকির
তখনি পুলিশ পাহারায়। যেনো সে সব ই জেনে রেখেছিলো।মাফি ও কিছু ভুলে যাওয়ার মত লোক না। এভাবে ৩
দিন গেলো। জাকির এক কাজে বাইরে বের হলো বের হবার একটু পরেই একটা গাড়িতে করে তুলে আনা হলো
জাকির কে। মনির এর খুব ইচ্ছা ছিলো যেনো তখনি জাকির কে মেরে ফেলে। কিনতু তার কালু ভাই বলছে
সাংবাদিক কে জ্যান্ত চাই। সে দেখতে চাই সাংবাদিক এর বুকের ভিতরের কলিজা টা কত বড়! নিয়ে যেয়ে
রাখা হলো মাফির পাথরের গোডাউনে সেখানে সাক্ষাত মাফি উপস্থিত। সাংবাদিক এখনো জানেনা কি হতে
চলেছে। মাফি হুকুম দিলো জাকির এর হাত পা চারিদিকে ধরে রাখতে যেনো নড়তে না পারে। তারপর জাকির
এর উপরে উঠে সে লাফাতে শুরু করলো আর জোরে জোরে হাসতে লাগলো। ওদিকে মড়মড় করে জাকির এর
পাজরের হাড় ভাংতে লাগলো। সাথে সাথেই একটা ছুরি দিয়ে বুক চিরে ফেলে কলিজা বের করে আনলো মাফি।
এনেই বললো ”এইটুকু কলিজা নিয়ে আমারে চ্যালেঞ্জ করে এ। এ মনি ফেলে দিয়ে আয়।” এই বলে থুঃ শব্দ
করে মাফি চলে গেলো। মনির লাশটা ডুবিয়ে দিলো পাথর বেধে। কর্ণফুলীনদীর গর্ভে লাশের পর লাশ জমে
চলেছে।
একদিন মাফি ঘাটেই আছে বসে বসে ভাবছে বয়স এখন মোটে ২৪ এখনি কত বড় সম্রাজ্য তার। হঠাৎ ঘাটে
দাঁড়িয়ে থাকা এক মেয়ের দিকে নজর আটকালো মাফির। যেনো আকাশ থেকে নেমে আসা কোনো পরী। নজর
সরাতে পারলো না । মনি সেইটা খেয়াল করলো। মনির যেয়ে মাফি কে বললো কি ব্যপার ভাই। মাফি মেয়েটির
দিকে দেখিয়ে মনির কে ভাবি বলে ডাকতে বললো। তখনি মনির নজর আটকালো মেয়েটির সাথে থাকা
আরেকটি মেয়ের উপর। যেনো দুইজন মিলে দুইজন এর প্রেমে ডুব সাতার কাটছে। হঠাৎ মাফি বলে উঠলো

কর্ণফুলী

কর্ণফুলীর ঘাট



“কিরে মনি, ভাবির নাম জানার ইচ্ছা নাই নাকি!” মনির দৌড়ে গেলো আর তাদের নাম শুনলো তারা উত্তর
দিলো একজনের নাম মুন্নি আর আরেকজনের মনিরা। তো মুন্নি কে পছন্দ করলো মাফি। মনিরা কে মনিরের।
মনির ত এখন সারাদিন মনিরার কথক ভেবে দিন কাটাই দেই। নামের ও কত সুন্দর মিল তাদের। যেনো
তাদের মিল হবেই। অন্য দিকে মাফির হাল ও তাই। কিন্তু মনিরের ব্যাপার টা মাফির অজানা ই থেকে গেলো।
এদিকে মাফি প্রতিদিন কথা বলার চেষ্টা করেও ব্যর্থ ।কোনোভাবে মেয়ের সামনে যেয়ে যেনো দাড়াতে
পারেনা। সে ক্ষেত্রে মনির দূত হয়ে যাই। কিন্তু মুন্নি বলে যে ভালোবাসে সে না বলা পর্যন্ত সে কোনো
ভাবেই এসব নিয়ে কথা বলবে না। কিন্তু ততদিনে মনির আর মনিরার মধ্যে ভালোলাগা শুরু হয়ে গেছে। দুইজন
ই দুজন কে ভালোবাসে। এবার মনির মাফিকে বললো যে মাফি ছাড়া কোনো ভাবেই আর সম্ভব না। তখন মাফি
নিজে গেলো। আর মুন্নি মাফি কে দেখে যেনো মন খারাপ করে উঠলো। অনেক টা রেগেও গেলো সে।
কোনোভাবেই মাফি কে বিয়ে করত্র রাজি নয় মুন্নি। আরো মাফির সম্পর্কে না জেনেই মাফিকে অপমান
করলো মুন্নি। অপমান গুলো যেনো মাফির কাছে কাটার মত বিধলো। মাফি কাওকে কিছু বললো না। রাতে মাফি
মনির কে বললো মুন্নি আর মনিরা কে তুলে আনতে। মনির অনেকটা খুশি মনেই কিছু বুঝে উঠতে না পেরেই
তুলে আনলো দুজন কে। আনার পর মাফি নিজের হাতে ছুরি দিয়ে দুইজন কে খুন করলো। মনিরের মাথায় যেনো
বাজ পড়লো। মনির বুঝতে পারছে না কি হলো। কিছু বলতেও পারছেনা। সে হতবাক হয়ে গেলো। কিন্তু কিছু
বলার নাই। মাফি হুংকার দিলো “মনি, এদের ফেলে দে নদীতে।” মনির ওদের নিয়ে গেলো প্রথমে মুন্নি কে
পাথর বেধে ডুবিয়ে দিলো। এবার মনিরা। অজান্তেই কাদছে মনির পানি গড়িয়ে পড়ছে চোখ বেয়ে। সে ডুবালো
না মনিরার লাশ। মাটি খুড়লো কবর দিলো মনিরা কে। নিজেই দু হাত তুললো দোয়া পড়ল যেনো মনিরা শান্তিতে
থাকে।
পুলিশ এর উপর অনেক চাপ। তবুও কেও মাফির দিকে হাত দিতে চাই না। কারন কারোর ই জান হারাবার ইচ্ছা
নাই। তারা আগেই ১ জন কে হারিয়েছে। কোনো কিছু করতে না পারাই বদলী হয়ে যাচ্ছে সব অফিসার। নতুন রা
এসেও কিছু করতে পারছে না। নতুন যারা আসছে তারাও ভয়ে গুটিয়ে থাকছে। তখনি দুজন অফিসার আবার
যোগ দিলো সেখানে। দুজনেই খুব সাহসী। দুজন ই লেগে পড়লো প্রমান খোজার কাজে কিন্তু কোনো মতেই
কোনো প্রমান তাদের হাতে আসেনা। অপরদিকে মাফি জড়িয়ে পড়ে রাজনীতি তে। সবার থেকে যেনো ২৪
বছরের এই যুবক টার অনেক ক্ষমতা হবেইনা বা কেনো তার উপরে যে কথা বলার কেও নেই। পুলিশ ও থমকে
গেছে। এমন অবস্থায় মাফি সিদ্ধান্ত নেই নির্বাচন এ দাড়ানোর। এদিকে মাফির লোকজন খুব খুশি
অন্যদিকে পুলিশের মাথায় হাত। কারন মাফি ভোটে জিতবেই এটা তারা জানত। কারন তার বাইরে যেয়ে
কাওকে ভোট দেয়া ত দূরে থাক। তার বিরুদ্ধে দাড়ানোর মত সাহস ও কারো নাই। দুই অফিসার আসিফ ও
শাকিল উঠে পড়ে লাগলো তথ্য প্রমান সংগ্রহে কিন্তু হাতে ত কিছুই আসেনা। যে যার মত সর্বোচ্চ চেষ্টা
চালিয়ে গেলো কিন্তু কোনো কিছুতেই কোনো কাজ হলো না। এর মাঝে হঠাৎ আসিফ অসুস্থ হয়ে পড়ল।
কয়েকদিন ধরে কোনো কাজে মন দিতে পারেনা। সে ছুটি নিলো। কিন্তু এদিকে শাকিল থেমে নেই সে তার স্থান
থেকে চেষ্টা করেই যাচ্ছে। এবার মাফির কানে গেলো পুলিশ এর কথা রাতে বাড়ি ফেরার সময় মটরসাইকেল
থেকে ফেলে দিয়ে তাকে হত্যা করে মাফি। তার পরিনতি ও এক ই পাথর বেধে পানিতে ডুবিয়ে দিলো সে। এবার
এ বিষয় টা একটু বড় আকারেই নাড়া দিলো পুলিশ ডিপার্টমেন্ট এ। আসিফ এবার উঠে পড়ে লাগলো কিন্তু
বরাবরের মত কোনো লাভ নেই। এবার ঘটলো অবাক এক ঘটনা রাফি এসে হাজির আসিফ এর বাসায়। সে সব
বললো আসিফ কে কিভাবে মাফির সব কাহিনী। আসিফ সাহেব সব শুনলেন এবং রাফি কে বললেন মাফি যেনো
আত্মসমার্পণ করতে। মাফি যে এটা কখনোই করবে না সেইটা রাফি আগে থেকেই জানত। কিন্তু এভাবে ত
কাওকে ধরা সম্ভব না কারন মাফি একবার বের হলে সে আসিফ কেও ছাড়বেনা এতে কোনো সন্দেহ নাই।

কিন্তু এমন সাক্ষী কোথায় পাবে। রাফিকে বিদায় দিয়ে সারারাত ভাবল আসিফ কিন্তু কোনো ভাবেই সে কি
করবে বুঝছে না। এভাবে রাতে না ঘুমিয়েই রাত পার করলো আসিফ।
আসিফের কথা টাও মাফির থেকে সরিয়ে রাখা যায়নি। মাফি জেনে গেলো মনির কে পাঠালো আসিফ কে নিয়ে
আসার জন্য। যাওয়ার সময় গোপনে মনিরার কবর জিয়ারত করলো মনির। চলে গেলো সোজা আসিফের
বাসায়। আসিফ প্রথমে অনেক টা ভয় ই পেলো। নিজের পিস্তল টা খুজতে লাগলো আসিফ। মনির নির্ভয় দিয়ে

বললো “স্যার, ভয় পাবেন না। আমি আপনাকে সাহায্য করবো আমি সব কমু কালু ভাইয়ের সব কথা কমু।
আপনি আমারে আটকাইয়েন না।” শুনে আসিফ কিছুটা থতমত খেয়ে গেলো। এ যেনো মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি।
আসিফ বললো “আমি তোমারে বিশ্বাস করব কেনো?” মনির বললো “ও যে আমার মনিরা রে ও মাইরে
ফ্যালছে স্যার।” বলেই হু হু করে কান্না শুরু করে দিলো মনির। আসিফ মনির এর থেকে সব শুনলো।ওইদিকে
রাত হয়ে যাওয়ার পর ও মনির এর কোনো খবর নাই। মাফির খুব চিন্তা হলো। মাফি দল নিয়ে গেলো
আসিফের বাসায় কিন্তু তত সময়ে আসিফ মনির কে নিয়ে চট্টগ্রাম পার হয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে
গেছে। মাফির মনির কে নিয়ে খুব টেনশন হলো। রাত কাটলো পরের দিনের পত্রিকায় মনিরের সব
সিকারোক্তি তুলে দেয়া। মাফির যেনো দুনিয়া ওলট পালট হয়ে গেলো। কিছুক্ষনের মধ্যেই মাফির পুরো
আস্তানা ঘিরে ফেললো পুলিশ। পালানোর কোনো উপায় নাই। মাফি তার পিস্তল দিয়ে কিছুক্ষন গুলি ছুড়লেও
তাতে কোনো লাভ হয়নি। মাফি আর তা দল ধরা পড়ল পুলিশের কাছে। পত্রিকায় খবর প্রকাশ হবার পরেই
সারা দেশ জুড়ে আন্দোলন শুরু হয়ে গেলো মাফির ফাসির জন্যে। অবশেষে মাফির রায়ের দিন আসলো।
রায় হলো “ফাসি”। এটা ত হবার ই ছিলো। শেষ সময়ে মনির গেলো মাফির সাথে দেখা করতে। তাদের কিছু
কথোপকথন
মনিরঃ কালু ভাই আমারে মাফ কইরেন। আমার আর কিছু করার ছিলোনা।
মাফিঃ মাইনষে কখনো কিছু বুইঝা করে নারে। করার পর যহন বুঝে তহন আর ঠিক করার সময় থাহেনা। তুই
ই দেখ কইদিন ভালা থাকবার পারস।
মনিরঃ কালু ভাই এমনে কইয়েন না আমারে ক্ষমা কইরেন।আমি মনিরারে অনেক ভালাবাইসে ফেলছিলাম
ভাই।
মাফিঃ আমারে ত একবারের লাইগা কইতে পারতি।
মনিরঃ ভাই আমি সব কইতেই চাইলাম কিন্তু আপনেই তারে দুনিয়া থেকে সরাই দিলেন।
মাফিঃ মাইনষে এই দুনিয়ার না রে,দুনিয়া ও এইসব মাইনষের না।
মনিরঃ আমারে মাফ কইরেন ভাই। [কান্না জুড়ে দিলো মনির]
মাফি একটু মুচকি হাসলো যেমন টা সে খুন করার পর লাশ দেখে হাসত। মনির বুঝতে পারলো এই হাসির মানে।
কিছুক্ষন পরেই যে নিজেই লাশ হবে কালুভাই।
১৮ ডিসেম্বর রাত ১১.৫৯ আর কিছুক্ষণ পরেই ১২.০১ এ ফাসি হবে।
১৯ ডিসেম্বর ১৯৯৭
ফাসি হলো। একটুও কাতরালো না বাচার আকুতি করল না কালু ভাই। পাপের বোঝা হয়ত বেশিই ছিলো তাই
আর নড়াচড়ার সুযোগ পাইনি সে। অফিসার আসিফ নিশ্চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো।
উদ্ধার হলো নদীর তলদেশ তুলে আনা লাশ।
মনির এর ১০ বছর এর জেল হলো।মনির এর একটায় দাবি ছিলো মনিরা রে যেনো ওইখান থেকে তুলে গোসল
করায়ে জানাজা পড়ায়ে আবার কবর দেই।
পরিসমাপ্তি ঘটল কালুভাই এর জীবন কাহিনী এর।

শুক্রবার, নভেম্বর ১৭, ২০২৩

ডাক্তার ও নার্সদের বিড়ে ক্যাম্পাস ও হাসপাতাল প্রাঙ্গণ

ডাক্তার ও নার্সদের বিড়ে ক্যাম্পাস ও হাসপাতাল প্রাঙ্গণ

সত্যের সন্ধানে বলিষ্ঠ, সত্য প্রকাশে নির্ভীক...


ডাক্তার ও নার্সদের বিড়ে ক্যাম্পাস ও হাসপাতাল প্রাঙ্গণ





প্রতিদিন সকাল রাত দুপুরে বিড় জমে যায় রুগী ও তাদের আত্মীয় সজনদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল প্রাঙ্গণে। সকাল থেকে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের আনাগোনা দেখা যায় মেডিকেল ক্যাম্পাসে। পাশেই অবস্থিত কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার ২১ ফেব্রুয়ারী আসলে মানুষের ভীড় লেগে যায় এমন সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়ে ওঠে শিক্ষার্থীদের মন। সকালে   সবাই জড়ো হয় শ্রদ্ধা জানাতে  এই শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে। যারা বাংলা ভাষা আন্দোলনে শহীদ (আত্নত্যাগ) হয়েছেন, তাদের স্মৃতি রক্ষার্থে  নির্মাণ করা হয়েছে এই শহিদ মিনার আর সেখানেই প্রতিদিন ভিনদেশী শব্দের সংমিশ্রণ।

ফেব্রুয়ারী মাসের ২১ তারিখ শহর ও বিভিন্ন প্রত্যন্তের এলাকা থেকেও অনেকে এ সময় এখানে আসে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য এক চিলতে সময় কাটানোর আশায়। কিন্তু বছরের সব দিন শহিদ মিনারে এই চিত্র দেখা যায় না।

অপর দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রতিদিন একই চিত্র ভিন্ন ভিন্ন ভাবে ফুটে উঠে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসের ভেতরে ছোট্ট একটি বাগানের মতো আছে। সেখানে প্রায় সময় ক্লাসের ফাঁকে শিক্ষার্থীরা বন্ধুবান্ধব এক সাথে বসে আড্ডা ছবি তুলা হয়ে থাকে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সৃষ্টি হয়েছে মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সেখানেও দালালের খপ্পরে পরে প্রতারিত হচ্ছে অনেক রুগী ও তার স্বজনরা। চিকিৎসা সেবাটা কি আরও সহজতর করা যায় না। জানি কতৃপক্ষ যথেষ্ট চেষ্টা করছেন তবুও কোথাও যেন একটা কমতি থেকে যাচ্ছে চিকিৎসা সেবার মান নিশ্চয়তায়। 

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগ বা আউটডোর শুক্রবার, শনিবার ও সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছাড়া অন্যান্য দিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ২ টা পর্যন্ত রোগী দেখা হয়। তাই এই দিন গুলো তে সকাল ৮ পূর্ব থেকে দুপুর  ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত দেখা যায় রুগী, ডাক্তার,রিপ্রেজেন্টেটিভ এবং বিভিন্ন দালাল চক্রের আনাগোনা। 


জরুরি বিভাগের ভীড় যেন কখনো শেষ হয় না সব সময় লেগেই থাকে। ওয়ার্ড গুলোতে দেখা মিলে রুগী ও সজনদের আর্তনাদ এসব দেখে যখন মন খারাপ হয়ে যায় তখন পূর্ব পাশের দিকটাতে খোলামেলা যায়গায় কিছুটা সবুজ ও ফুলের মুগ্ধতায় হারিয়ে যেতে হয় এক অনাবিল দুঃখ কষ্টের মধ্যে স্বপ্নের জগতে।

তখন একটা লাইন বার বার মনে পড়ে প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম। আমাদের দেশে কোনো ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পর কিছুদিন আলোচনা থাকে, হৈ-চৈ শুরু হয় এটা নিয়ে কিছুদিন অনেকেই কথা বলে। কিন্তু ঘটনা যেন আর না ঘটে তার জন্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। তাই আসুন, নিজ নিজ অবস্থান থেকে অনিয়ম এর বিরুদ্ধে নিজেদের দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করি। পাশাপাশি সংশ্লিষ্টদের প্রতি আবেদন, তারা যেনো এসব বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ও যথাযথ ভাবে বাস্তবায়ন করে। কেন বললাম এই কথা তা জানেন? ঢাকা মেডিক্যাল এর আশে পাশে দেখা মিলে মাদক সেবনকারীদের যারা প্রকাশ্য মাদক সেবন করে যাচ্ছে। অথচ পাশেই পুলিশের গ্রুপ তাছাড়া কাছাকাছি অবস্থিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

পুলিশ জনগণের বন্ধু এই কথাটার বাস্তবায়ন চাই শুধু কথা নয় কাজেও তা প্রমাণিত হউক। আরও একটি বিষয় শিক্ষার্থীদের দ্বারা যদি এখন থেকেই ভালো কাজের আলো ছড়িয়ে না পড়ে তবে ভবিষ্যতে মানুষ তাদের কাছ থেকে কি-ই বা আশা করতে পারে।

যাইহোক মূলকথা হলো প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম যদি এই সকল অনিয়ম বন্ধ এবং জনসচেতনতা সৃষ্টি নিজের প্রতি যত্নশীল ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায় তবে হাসপাতালে রোগীর থেকে বেশি চিকিৎসক থাকবে বলে আমি মনে করি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এমন অনেক রুগী দেখেছি যাদের মধ্যে কেউ কেউ ছিলো সিকিউরিটি গার্ড যাদেরকে ছুড়িক আঘাত করে জখম করেছে মাদকাসক্ত সন্ত্রাস চক্র এমন অনেক রুগী দেখেছি নিজেদের প্রতি যত্নশীল না হওয়ায় রুগ বাসা বেঁধেছে তাদের শরীরে। হতাশা, অবহেলায়, দুশ্চিন্তায় নিজেকে ঠেলে দিচ্ছে মৃত্যুর দারপ্রান্তে। তাই বলছি সচেতন থাকুন সৎ থাকুন সবাই মিলে সুস্থ থাকুন। 

 সমস্যা বোঝার চেষ্টা করুন , করুন সমাধান;  পাশের মানুষের সাহায্যে এগিয়ে যান! 


ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের দিকে নজর দেওয়া জরুরি

ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের দিকে নজর দেওয়া জরুরি

সত্যের সন্ধানে বলিষ্ঠ, সত্য প্রকাশে নির্ভীক...




ঢাকা শহর থেকে যে কয়েকটি জেলা অতি নিকটে তার মধ্যে আমাদের গাজীপুর জেলা অন্যতম। এই গাজীপুর জেলাতেই ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্ক অবস্থিত। গাছে গাছে ঢাকা এ উদ্যানের প্রতিটি জায়গাই দৃষ্টিনন্দন নজরকাড়া। সারি সারি বৃক্ষের মাঝে পায়ে চলা পথ। হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে পড়লে বিশ্রামের জন্য আছে বেঞ্চ কিংবা ছাউনি। বনের মাঝে কোথাও কোথাও চোখে পড়বে ধানক্ষেত। কোথাও আবার পুকুর কিংবা ছোট আকারের লেক।একসময় ভাওয়াল উদ্যানে পাওয়া যেত ব্লাক প্যান্থার, চিতা বাঘ, ময়ূর, হাতি। এসব এখন ইতিহাস। ক্রমাগত বন উজাড়ের ফলে দিনে দিনে এর পরিধি কমে আসায় এ বন থেকে বিলুপ্ত হয়েছে নানান বন্যপ্রাণী। তবে বাংলাদেশ সরকার এ বনকে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয় স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে। 
ঢাকার গাড়ি ঘোড়া দেখে দেখে যদি একটু ক্লান্ত হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে জাতীয় উদ্যানে আছে ঘন বন আর ঝোপ জঙ্গল। শাল বা গজারি, এই উদ্যানের প্রধান বৃক্ষ। এসব ছাড়াও ২২০ প্রজাতির গাছপালা আছে এখানে। বনের ভেতর দিয়ে ঘুরে বেড়ানোর জন্য আছে রাস্তা ও হাইকিং ট্রেইল যেখানে নিরিবিলি নিজের মত করে হেঁটে দেখতে পাবেন একেকটি গাছ। ১৯৭৪ সাল থেকে কার্যক্রম শুরু হলেও, আনুষ্ঠানিক ভাবে ১৯৮২ সালে জাতীয় উদ্যান হিসেবে এটি স্বীকৃতি পায়। জলে ভাসা পদ্ম দেখতে ছুটে যেতে পারেন এইখানে। উদ্যানের বিশালাকার কয়েকটি লেক, যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পদ্মপুকুর। এই লেকটিতে পদ্মফুলের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য হৃদয়কাড়া। সেই সাথে অরণ্যের গাঢ় সবুজে জলের সমাহার এই উদ্যানের সৌন্দর্যকে করেছে অনন্য। জাতীয় উদ্যান নিজ মনে ঘুরে বেড়ানোর মত আনন্দই অন্য রকম লেকগুলোতে নৌকায় ঘুরতে পারবেন, আবার ইচ্ছে করলে বড়শি দিয়ে মাছ ধরতেও পারবেন। সেই ব্যবস্থাও আছে, যদিও সেজন্য একটি নির্দিষ্ট অংকের অর্থ গুনতে হবে আপনাকে। ঘুরতে আসা সকলের জন্য আরও আছে, প্রজাপতি বাগান, যেখানে দেখতে পারবেন নানা প্রজাতির রঙ বেরঙের প্রজাপতি! দু-একটা প্রজাপতি যদি আপনার কাঁধে নাই বসে, তাহলে এই ট্যুর যেন বৃথা! শুধু প্রজাপতি দেখেই কিন্তু শেষ নয়। আছে কচ্ছপ প্রজনন কেন্দ্র যেখানে দেখা মিলবে সব বয়সী কচ্ছপদের। সাথে আছে মিনি এক চিড়িয়াখানা। সমস্ত উদ্যানটা এক সাথে এক সময়ে দেখতে চাইলে রয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান সাধারণত খোলা থাকে ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। উদ্যানে প্রবেশ করতে আপনাকে দিতে হবে মাত্র ১০ টাকা। সাথে পাচ্ছেন নিরাপদে গাড়ি রাখার সুবিধা। ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান ঘুরে যদি সময় থাকে ঘুরে আসতে পারেন, ভাওয়াল রাজবাড়ি থেকে। ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান থেকে কেবল ১৫ কিলোমিটার দূরেই অবস্থিত এই জমিদার বাড়ি। অতীতের পাতায় একটু সময় কাটিয়ে আসতে ঘুরে দেখা জরুরী এই জমিদার বাড়ি। বিশাল এই জমিদার বাড়ি আসলেই যেন এক গোলক ধাঁধা। ঘুরতে ঘুরতে কখন যে হারিয়ে যাবেন। যাইহোক জাতীয় উদ্যানের বিষয়ে ফিরে আসি।
পৃথিবীর অন্যান্য জাতীয় উদ্যানের আদলে ৫০২২ হেক্টর জমিতে ১৯৭৩ সালে এ উদ্যান সরকারিভাবে গড়ে তোলা হয়। ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের মূল উদ্ভিদ হলো শাল। প্রায় ২২০ প্রজাতির গাছপালা আছে এ বনে। এর মধ্যে ৪৩ প্রজাতির বিভিন্ন রকম গাছ, ১৯ প্রজাতির গুল্ম, ৩ প্রজাতির পাম, ২৭ প্রজাতির ঘাস, ২৪ প্রজাতির লতা, ১০৪ প্রজাতির ঔষধি গাছ। জীব বৈচিত্র্যেরও কমতি নেই এ বনে। প্রায় ১৩ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ৯ প্রজাতির সরীসৃপ, ৫ প্রজাতির পাখি ও ৫ প্রজাতির উভচর প্রাণীও রয়েছে এ বনে। গজারি বৃক্ষের আধিক্যের কারণে অনেকের কাছে এটি ভাওয়ালের গজারির গড় হিসাবেও পরিচিত। প্রায় ৫০২২ হেক্টর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান ১৯৮২ সালে জাতীয় উদ্যানের স্বীকৃতি লাভ করে। উদ্যানের ২২১ প্রজাতির গাছের মধ্যে রয়েছে ৪৩ প্রজাতির বৃক্ষ, ১৯ প্রজাতির গুল্ম, ৩ প্রজাতির পাম, ২৭ প্রজাতির ঘাস, ২৪ প্রজাতির লতা ও ১০৪ প্রজাতির ঔষধি গাছ। এছাড়াও রয়েছে ৬৪ বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী যাদের মধ্যে ১৩ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ৯ প্রজাতির সরীসৃপ, ৫ প্রজাতির পাখি ও উভচর প্রাণী অন্তর্ভুক্ত। প্রাকৃতিক মনোরম পরিবেশ ও জীব বৈচিত্রে পরিপূর্ণ এই উদ্যানে ছুটির দিনে অনেকে পিকনিক এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। ভাওয়াল গড়ের ৩ নাম্বার গেট দিয়ে প্রবেশ করলে প্রথমেই টেরাকোটায় মোড়ে প্রবেশ দ্বারের দুটি হাতির ভাস্কর্য নজরে পড়বে। উদ্যানের ভেতরে রয়েছে ৩১ টি পিকনিক স্পট, ১৯ টি চমৎকার কটেজ, অত্যাধুনিক রেস্ট হাউজ, প্রজাপতি বাগান, কচ্ছপ প্রজনন কেন্দ্র ও শিশুপার্ক। উদ্যানের সারি সারি বৃক্ষের মাঝে হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হলে বিশ্রামের জন্য রয়েছে বেঞ্চ বা ছাউনি। বিস্তৃত এই বনের মাঝে আরো চোখে পড়বে সবুজ ধানক্ষেত, পুকুর বা ছোট লেক। লেকের জলে নৌকায় ঘুরে বেড়ানোর সাথে সাথে পুরো উদ্যান দেখার জন্য রয়েছে সুউচ্চ ওয়াচ টাওয়ার।

ঢাকা মহাখালী থেকে ২৮ কিলোমিটার দূরে ও গাজীপুর থেকে মাত্র ৪.৩ কিলোমিটার দূরে ন্যাশনাল পার্কটি অবস্থিত।ঢাকার মহাখালী থেকে সম্রাট, অন্যন্যা,উজানভাটি এবং প্রভাতী বনশ্রী পরিবহন সহ কিশোরগঞ্জ, চালাক চার, ময়মনসিংহগামী যেকোনো বাসে চড়ে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের ফটকের সামনেই নামা যায়। ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের প্রবেশ মূল্য জনপ্রতি ২০ টাকা। প্রাইভেট কার কিংবা মাইক্রোবাস নিয়ে প্রবেশ করতে লাগবে ৩০ টাকা আর মিনি বাসের জন্য প্রবেশমূল্য ৫০ টাকা। 


ভাড়া ও প্রবেশমূল্য
সূর্যোদয় হতে সূর্যাস্থ পর্যন্ত ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান পরিদর্শন করা যায়। জনপ্রতি প্রবেশ মূল্য ২০ টাকা। প্রবেশ মূল্যের সাথে শিশু পার্ক, ওয়াচ টাওয়ার, মিনি চিড়িয়াখানা এবং পাবলিক টয়লেটের চার্জ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস বা বাসে নিয়ে প্রবেশ করতে চাইলে যথাক্রমে ৬০, ১০০ ও ২০০ টাকা প্রদান করতে হয়।

যোগাযোগ
পিকনিক স্পট বা রেস্ট হাউজ ভাড়া নেওয়ার জন্য বন বিভাগের মহাখালি কার্যালয় থেকে অগ্রিম বুকিং দিতে হয়। এছাড়া ভাওয়াল গড় থেকেই সামান্য দূরে অবস্থিত রাজেন্দ্রপুর জাতীয় উদ্যানের রেঞ্জ কার্যালয় থেকেও নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের বুকিং নেওয়া যায়।
 মোবাইল: 01781-733000, 01713-575055

কিভাবে যাবেন
গাজীপুর সদর থেকে ভাওয়াল গজারির গড় অর্থাৎ ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্কের দূরত্ব মাত্র ৩ কিলোমিটার। জয়দেবপুর চৌরাস্তা পার হয়ে একটু সামনে এগোলেই হাতের ডান দিকে ভাওয়াল গড়ের প্রধান প্রবেশ পথ নজরে পড়বে। ঢাকা থেকে নিজস্ব গাড়ীতে অথবা মহাখালি, বিমানবন্দর বা রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তা থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ হাইওয়ে দিয়ে ময়মনসিংহগামী যেকোন বাসে ভাওয়াল উদ্যানে যেতে পারবেন। আবার গুলিস্থান থেকে প্রভাতি বা বনশ্রী পরিবহনের বাসে উঠে ন্যাশনাল পার্কের ৩ নাম্বার গেটে নামার কথা বললে সরাসরি ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের প্রধান গেটে নামতে পারবেন। বাস ভেদে জনপ্রতি ভাড়া ৮০ থেকে ১০০ টাকা।


কোথায় থাকবেন
ঢাকা থেকে ভাওয়াল উদ্যানে সারাদিন ঘুরে বিকাল বা সন্ধ্যার মধ্যেই ফিরে আসা যায়। এছাড়া রাতে থাকার জন্য ভাওয়াল গজারি গড়ের কাছে আছে সারাহ, সোহাগ পল্লী, স্প্রিং ভ্যালী, ছুটি, নক্ষত্রবাড়ি এবং জল ও জঙ্গলের কাব্যের মতো বেশ কিছু রিসোর্ট। তবে রিসোর্টগুলোতে যেতে চাইলে আগে থেকে বুকিং দিয়ে রাখা ভাল। এছাড়া গাজীপুরে সাধারন মানের অসংখ্য হোটেল রয়েছে।

কোথায় খাবেন
ভাওয়াল গড়ের ভিতরে হালকা চা ও নাস্তা খাওয়ার ছোট টঙ্গের দোকান ও ক্যান্টিন রয়েছে। তবে পিকনিক বা কোনও অনুষ্ঠানে বিশেষ অনুমতি সাপেক্ষে কটেজে রানা-বান্না করার সুযোগ আছে।      

কিছু সতর্কতা
নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে শুধু এক বা দুইজন না গিয়ে গ্রুপ করে ভাওয়াল গড়ে ঘুরতে যাওয়া ভালো।
ভাওয়াল ন্যাশনাল উদ্যানের কটেজে রাত্রিযাপনের অনুমতি নেই।
উদ্যানের ভিতরের লেকে মাছ ধরা ও পাখি শিকার করার ব্যাপারে বিধি নিষেধ আছে।
উদ্যানের সিকিউরিটি এলাকার বাইরে যাওয়া বিপদজনক।
উদ্যানের ভিতর মাইক বা উচ্চ শব্দ তৈরি করা যেকোন বাদ্যযন্ত্র বাজানো নিষেধ।
বনের ভিতরে হাটার সময় সাথে সান গ্লাস, টুপি, পানির বোতল ও এন্টিসেপটিক ক্রিম সাথে রাখুন।

গাজীপুরের অন্যন্য দর্শনীয় স্থান

গাজীপুরের অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে নুহাশ পল্লী, বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক ও রাজেন্দ্র ইকো পার্ক উল্লেখযোগ্য।
ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান থেকে রাজেন্দ্র ইকো পার্ক —এর দূরত্ব ১২ কি.মি, নুহাশ পল্লী ১১ কি.মি. এবং বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক ১০ কি.মি। 

 যে কোন পর্যটন স্থান আমাদের সম্পদ, আমাদের দেশের সম্পদ। এইসব স্থানের প্রাকৃতিক কিংবা সৌন্দর্য্যের জন্যে ক্ষতিকর এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকুন, অন্যদেরকেও উৎসাহিত করুন। দেশ আমাদের, দেশের সকল কিছুর প্রতি যত্নবান হবার দায়িত্বও আমাদের।

সতর্কতাঃ হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ভাড়া ও অন্যান্য খরচ সময়ের সাথে পরিবর্তন হয় তাই ভ্রমণ গাইডে প্রকাশিত তথ্য বর্তমানের সাথে মিল না থাকতে পারে। তাই অনুগ্রহ করে আপনি কোথায় ভ্রমণে যাওয়ার আগে বর্তমান ভাড়া ও খরচের তথ্য জেনে পরিকল্পনা করবেন। আপনাদের সুবিধার জন্যে যোগাযোগ এর মোবাইল নাম্বার দেওয়া হয়েছে। তবে অবশ্যই এসব নাম্বারে কোনরূপ আর্থিক লেনদেনের আগে যাচাই করার অনুরোধ করা হলো। 
কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের সৌন্দর্য রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। এই দৃষ্টিনন্দন জাতীয় উদ্যান অবহেলায় আস্তে আস্তে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এর সৌন্দর্য নিরাপত্তা ব্যাবস্থা জোরদার করুন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করুন।

বুধবার, অক্টোবর ২৫, ২০২৩

বাংলাদেশ

বাংলাদেশ

সত্যের সন্ধানে বলিষ্ঠ, সত্য প্রকাশে নির্ভীক...



বাংলাদেশ, দক্ষিণ এশিয়ার একটি দেশ, ভারতের পশ্চিমে, মায়ান্মারের উত্তরে, বঙ্গোপসাগরের পূর্বে, এবং ভূটানের উত্তরপূর্বে অবস্থিত। এটি দক্ষিণ এশিয়ার একটি প্রস্তুত দেশ, যা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের ফলে স্বাধীনতা অর্জন করে।

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা, এবং জনসংখ্যা দুনিয়ার সবচেয়ে ঘনবস্তি দেশের মধ্যে একটি। এই দেশের ভূষ্বরের একটি মহানদী নদী আপনান্দা, যা দেশের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

বাংলাদেশের অর্থনীতি ব্যাপকভাবে কৃষি-উদ্যোগ ও গাড়িয়ে উদ্যোগে নির্ভর করে, এবং প্রধান রূপে খাদ্য উৎপাদনে বাংলাদেশের অর্থনীতি প্রধানভাবে চাষ ও প্রাণিসম্পদে নির্ভর করে। দেশটির সাধারণ জনগণ সংসার ক্ষুদ্র স্ক্যালে উদ্যোগে যোগ দেন এবং গাড়িয়ে ব্যবসা, পানি মৎস্য চাষ, পানিতে চাষ, ও গাড়িয়ে ব্যবসা সর্বাধিক প্রচলিত।

বাংলাদেশ সাংবিদানিকভাবে বাঙালি ভাষা, সংস্কৃতি এবং সাংস্কৃতিক ধর্মে মহান, এবং বাংলা ভাষাটি দেশের আধিকারী ভাষা। এখানে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকসংখ্যা পাওয়া যায়, এবং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র বেশি উপস্থিত।

বাংলাদেশ সংযুক্ত জাতির সঙ্ঘের একটি সদস্য দেশ এবং দ্বিপক্ষীয় বৈশ্বিক সম্মেলনের সদস্য হিসেবে গ্রহণ করে। এটি পর্যাপ্ত সুদৃঢ় অর্থনীতি বেসিসহ, সামরিক বাল্য শ্রম এবং সামাজিক সমস্যা সমাধানে চূড়ান্তভাবে চ্যুক্তি প্রদান করছে।

বাংলাদেশের ইতিহাস বিস্তারিত হোলো:

1. **প্রাচীন এবং গুপ্তবংশ**: বাংলাদেশের ইতিহাস প্রাচীনকাল থেকে শুরু হয়। প্রাচীন কালে বাংলাদেশে পাল এবং চন্দ্র বংশের শাসক রাজা হত। সংস্কৃত দাক্ষিণাত্য জাতি এই সময়ে এই সময়ে বাংলা ভাষার উৎপাদন হয়।

2. **মুঘল শাসন**: ১৫শ শতাব্দীতে, মুঘল সাম্রাজ্য বাংলাদেশে আগত হয়। আকবর এবং আউরাংজেবের শাসনামলে দেশটি সংজ্ঞান পেত।

3. **ব্রিটিশ শাসন**: ১৮শ শতাব্দীর শুরুতে, বাংলাদেশ ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অধীনে আসে। বাংলাদেশ পূর্ব এবং পশ্চিম বেঙ্গল প্রিসিডেন্সির একটি অংশ হয়। ১৯৪৭ সালে, বাংলাদেশ দেশের অংশ হিসেবে স্বাধীন হয়।

4. পাকিস্তান থেকে স্বাধীনতা: ১৯৪৭ সালের ভারত ভাগানে বাংলাদেশ পাকিস্তানের একটি অংশ হিসেবে যুক্ত হয়। তবে, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ মুক্ত