স্বাস্থ্য লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
স্বাস্থ্য লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

মঙ্গলবার, ফেব্রুয়ারী ১৮, ২০২৫

চিকিৎসা বিজ্ঞানে উন্নতি

চিকিৎসা বিজ্ঞানে উন্নতি

চিকিৎসা বিজ্ঞানে উন্নতি আমাদের জীবনের গুণগত মান উন্নত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। সময়ের সাথে সাথে প্রযুক্তি ও গবেষণার ক্ষেত্রে নানা সাফল্য এসেছে, যার ফলে চিকিৎসার ক্ষেত্রেও বিপ্লব ঘটেছে। একুশ শতকের আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা শুধুমাত্র রোগ নির্ণয়ে নয়, চিকিৎসা পদ্ধতিতেও এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

ভবিষ্যতের চিকিৎসাবিজ্ঞানের একটি কল্পনাচিত্র দেওয়া হলো! 😊 এটি উন্নত চিকিৎসা প্রযুক্তি, এআই-চালিত রোবটিক সার্জন এবং হোলোগ্রাফিক স্ক্রিন সহ একটি আধুনিক হাসপাতালের দৃশ্য তুলে ধরে। 




১. জেনেটিক চিকিৎসা
জেনেটিক চিকিৎসা বা জিন থেরাপি বর্তমানে একটি অত্যাধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি। এর মাধ্যমে বিশেষ ধরনের জিনকে সংশোধন করে বংশগত রোগ নিরাময় করা সম্ভব হচ্ছে। এটি এমন এক বৈপ্লবিক উদ্ভাবন যা জীববিদ্যার জগতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

২. রোবোটিক সার্জারি
রোবোটিক সার্জারি চিকিৎসা বিজ্ঞানের আরেকটি মাইলফলক। এতে অত্যাধুনিক রোবট ব্যবহার করা হয়, যা মানবদেহে অত্যন্ত সূক্ষ্ম অস্ত্রোপচার করতে সক্ষম। এতে চিকিৎসকরা আরও সঠিক এবং কম সময়ের মধ্যে অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করতে পারেন।

৩. মলিকুলার মেডিসিন
মলিকুলার মেডিসিনের মাধ্যমে প্রতিটি রোগের প্রতি আরও নির্দিষ্ট চিকিৎসা পদ্ধতি তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে। এটি রোগের কারণ শনাক্ত করে, সঠিক সময়ে এবং সঠিকভাবে চিকিৎসা প্রদান করতে সহায়ক।

৪. টেলিমেডিসিন
বিশ্বজুড়ে রোগীদের চিকিৎসা সেবা পৌঁছানোর জন্য টেলিমেডিসিন একটি যুগান্তকারী উদ্ভাবন। এই সিস্টেমের মাধ্যমে চিকিৎসকরা দূরবর্তী স্থানে বসেও রোগীদের সাথে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পরামর্শ দিতে পারেন। এটি বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে বাস করা মানুষদের জন্য খুবই উপকারী।

৫. চিকিৎসা প্রযুক্তির অগ্রগতি
আজকাল ডায়াগনস্টিক যন্ত্রপাতি, স্ক্যানিং প্রযুক্তি (যেমন MRI, CT স্ক্যান), এবং বায়োটেকনোলজি অত্যন্ত উন্নত হয়ে উঠেছে। এসব যন্ত্রপাতি রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে দ্রুত এবং সঠিক তথ্য প্রদান করতে সহায়তা করছে।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের এই উন্নতি কেবল আমাদের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি করেনি, বরং বহু জীবন বাঁচানোর ক্ষেত্রেও সহায়ক হয়েছে। তবে, এই উন্নতির পাশাপাশি কিছু চ্যালেঞ্জ যেমন স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার সমতা, প্রযুক্তিগত বৈষম্য এবং চিকিৎসা খরচের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

চিকিৎসা সেবা যেমন হওয়া উচিৎ

চিকিৎসা সেবা যেমন হওয়া উচিৎ

বর্তমান যুগে স্বাস্থ্য সেবা আধুনিক প্রযুক্তি ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতির সাথে সাথে দ্রুত পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তবে উন্নত প্রযুক্তি ও চিকিৎসা সরঞ্জামের পাশাপাশি মানবিকতা, সহানুভূতি ও নৈতিকতা বজায় রেখে একটি আদর্শ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করাটাই সত্যিকারের প্রগতির পরিচায়ক।


লেখক তৌফিক সুলতান স্যার এর লেখা সমূহ ||Writer Taufiq Sultan Sir's writings || Writer Towfiq Sultan Sir's writings ||كتابات الكاتب توفيق سلطان سير ||作家陶菲克·苏丹先生的著作 ||作家 Towfiq Sultan Sir の著作 ||Écrits de l'écrivain Towfiq Sultan Sir ||Yazar Towfiq Sultan Sir'in yazıları ||लेखक तौफीक सुल्तान सर की रचनाएँ || Al Towfiqi, Welftion CEO, আল তৌফিকী পরিবার, হাউজ অফ আল তৌফিকী, ওয়েল্ফশন নগরী,Welftion CEO,House Of Al Towfiqi, News,খবর,সংবাদ, লেখক, কবি,লেখা

১. সকলের জন্য সহজলভ্যতা:
প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকার হলো স্বাস্থ্য সেবা। কোনো ভৌগলিক, আর্থিক বা সামাজিক বাধাকেই অতিক্রম করে, প্রত্যেকের কাছে সুলভ ও সহজলভ্য চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দেওয়া উচিত। প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে শুরু করে শহরের ব্যস্ত রাস্তা—প্রত্যেক স্থানে উন্নত স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ক্লিনিক ও হাসপাতাল থাকা জরুরি, যাতে জরুরি অবস্থায় বা সাধারণ অসুস্থতায় চিকিৎসা পাওয়া যায়।

২. মানসম্মত ও আধুনিক চিকিৎসা:
উন্নত প্রযুক্তি ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা আমাদের চিকিৎসা সেবাকে আরও কার্যকর ও নির্ভরযোগ্য করে তুলতে পারে। তবে, সর্বোচ্চ মানের চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য চিকিৎসকদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ, সর্বাধুনিক যন্ত্রপাতি ও চিকিৎসা প্রযুক্তির ব্যবহার অপরিহার্য। রোগ নির্ণয় থেকে শুরু করে চিকিৎসার প্রতিটি ধাপে সর্বোচ্চ মান বজায় রাখা যেন রোগীর স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে।


লেখক তৌফিক সুলতান স্যার এর লেখা সমূহ ||Writer Taufiq Sultan Sir's writings || Writer Towfiq Sultan Sir's writings ||كتابات الكاتب توفيق سلطان سير ||作家陶菲克·苏丹先生的著作 ||作家 Towfiq Sultan Sir の著作 ||Écrits de l'écrivain Towfiq Sultan Sir ||Yazar Towfiq Sultan Sir'in yazıları ||लेखक तौफीक सुल्तान सर की रचनाएँ || Al Towfiqi, Welftion CEO, আল তৌফিকী পরিবার, হাউজ অফ আল তৌফিকী, ওয়েল্ফশন নগরী,Welftion CEO,House Of Al Towfiqi, News,খবর,সংবাদ, লেখক, কবি,লেখা



৩. সুলভতা ও ন্যায়সঙ্গত মূল্য:
চিকিৎসা সেবা যদি শুধুমাত্র উন্নত ও আধুনিক হয়, কিন্তু সুলভ না হয়, তাহলে সেটির প্রকৃত উদ্দেশ্য তৃপ্তি পাবে না। চিকিৎসা খাতে অতিরিক্ত খরচ কমিয়ে, সবার জন্য ন্যায়সঙ্গত ও সুলভ মূল্যে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা দরকার। সরকার, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সেবামূলক সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে একটি যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে, যাতে আর্থিক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও প্রত্যেকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পেতে পারে।

৪. রোগী-কেন্দ্রিক সেবা:
চিকিৎসা সেবার মূল লক্ষ্য শুধু রোগ নিরাময় নয়, বরং রোগীর সার্বিক মঙ্গল নিশ্চিত করা। রোগীর প্রতি সহানুভূতি, তার মানসিক অবস্থা ও সামাজিক প্রেক্ষাপট বুঝে চিকিৎসা প্রদান করা অত্যন্ত জরুরি। চিকিৎসক ও নার্সরা যেন রোগীর সাথে খোলামেলা আলোচনা করে, সঠিক তথ্য প্রদান করে ও তার অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব সহকারে নেয়, তাতে চিকিৎসা প্রক্রিয়া আরও ফলপ্রসূ হয়।


লেখক তৌফিক সুলতান স্যার এর লেখা সমূহ ||Writer Taufiq Sultan Sir's writings || Writer Towfiq Sultan Sir's writings ||كتابات الكاتب توفيق سلطان سير ||作家陶菲克·苏丹先生的著作 ||作家 Towfiq Sultan Sir の著作 ||Écrits de l'écrivain Towfiq Sultan Sir ||Yazar Towfiq Sultan Sir'in yazıları ||लेखक तौफीक सुल्तान सर की रचनाएँ || Al Towfiqi, Welftion CEO, আল তৌফিকী পরিবার, হাউজ অফ আল তৌফিকী, ওয়েল্ফশন নগরী,Welftion CEO,House Of Al Towfiqi, News,খবর,সংবাদ, লেখক, কবি,লেখা

৫. রোগ প্রতিরোধ ও স্বাস্থ্য সচেতনতা:
উন্নত চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ও প্রাথমিক স্বাস্থ্য শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, টিকা অভিযান ও সচেতনতা কর্মসূচির মাধ্যমে অনেক রোগের প্রাথমিক অবস্থাতেই সনাক্তকরণ ও প্রতিরোধ সম্ভব। ব্যক্তিগত যত্ন, সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে স্বাস্থ্য রক্ষার গুরুত্ব প্রতিটি নাগরিককে বোঝানো প্রয়োজন।

৬. প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার:
আধুনিক চিকিৎসা সেবায় টেলিমেডিসিন, ইলেকট্রনিক মেডিকেল রেকর্ড, রোবোটিক সার্জারি ও অন্যান্য উদ্ভাবনী প্রযুক্তির ব্যবহার চিকিৎসা সেবাকে আরও উন্নত ও দ্রুততর করতে পারে। তবে, প্রযুক্তির ব্যবহারে মানবিক সম্পর্ক ও রোগীর গোপনীয়তা রক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি। চিকিৎসক ও রোগীর মধ্যে বিশ্বাস ও আন্তরিকতার সম্পর্ক বজায় রেখে প্রযুক্তিকে সেবার সহায়ক হিসেবে কাজে লাগানো উচিত।

৭. নৈতিকতা ও পেশাদারিত্ব:
চিকিৎসক, নার্স ও সকল স্বাস্থ্যকর্মীর নৈতিকতা ও পেশাদারিত্বই চিকিৎসা সেবার মেরুদণ্ড। রোগীর প্রতি সম্মান, গোপনীয়তার প্রতি শ্রদ্ধা ও সঠিক ও সময়োপযোগী তথ্য প্রদান—এসব গুণাবলী একটি আদর্শ চিকিৎসা সেবার অপরিহার্য অংশ। রোগীর প্রতি সহানুভূতি ও মানবিক দায়বদ্ধতা যেন চিকিৎসা ক্ষেত্রের মূল ভিত্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত থাকে, তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

সুন্দর সমাজের অগ্রদূত হিসেবে স্বাস্থ্য সেবা কেবল একটি প্রয়োজনীয়তা নয়, এটি মানবিকতার প্রকাশ। উন্নত প্রযুক্তি, মানসম্মত চিকিৎসা, সুলভ সেবা ও রোগী-কেন্দ্রিক মানসিকতা—এই গুণাবলীর সমন্বয়ে আমরা একটি সত্যিকার আদর্শ চিকিৎসা সেবা গড়ে তুলতে পারি। আসুন, আমরা সবাই মিলে একটি স্বাস্থ্যবান, সুস্থ ও মানবিক সমাজের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপান্তরিত করার পথে এগিয়ে চলি, যেখানে প্রত্যেক নাগরিক তার জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে নিরাপত্তা ও আরামের অনুভূতি লাভ করবে।


সোমবার, ফেব্রুয়ারী ১৭, ২০২৫

চিকিৎসা সেবায় সহজলভ্যতা ও উন্নয়ন জরুরি: জনগণের মৌলিক অধিকার

চিকিৎসা সেবায় সহজলভ্যতা ও উন্নয়ন জরুরি: জনগণের মৌলিক অধিকার

পত্রিকায় প্রকাশিত লেখক তৌফিক সুলতান স্যার এর লেখা,Towfiq Sultan Sir,المؤلف توفيق سلطان السير نشر في جريدة توفيق سلطان السير,Author Towfiq Sultan Sir published in the newspaper, Towfiq Sultan Sir,চিকিৎসা সেবায় সহজ ও উন্নয়ন জরুরি 


 – বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হলো সাধারণ মানুষের জন্য সহজ ও উন্নত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা। শহর ও গ্রামাঞ্চলে চিকিৎসা সেবার মধ্যে বিরাট বৈষম্য রয়েছে, যা দ্রুত সমাধানের প্রয়োজন। চিকিৎসার উচ্চ ব্যয়, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাব, দক্ষ চিকিৎসকের সংকট, এবং সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের অসংগঠিত ব্যবস্থাপনা—সব মিলিয়ে জনসাধারণের স্বাস্থ্যসেবা একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে।

স্বাস্থ্যসেবায় বিদ্যমান সমস্যা

🔹 সরকারি হাসপাতালে জনসাধারণের চাপ – অধিকাংশ মানুষ সরকারি হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল, কিন্তু পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার অভাবে চিকিৎসা পাওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে।
🔹 প্রাইভেট চিকিৎসার উচ্চ ব্যয় – বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসার ব্যয় সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।
🔹 গ্রামাঞ্চলে চিকিৎসা সংকট – দুর্গম এলাকায় বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ও আধুনিক চিকিৎসা সুবিধার অভাব রয়েছে, ফলে অনেক সময় রোগীরা সঠিক চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হন।
🔹 অতিরিক্ত ওষুধ ও পরীক্ষা নির্ভরতা – অপ্রয়োজনীয় মেডিকেল পরীক্ষা ও ওষুধের অতিরিক্ত প্রেসক্রিপশন অনেক রোগীর জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়ায়।
🔹 স্বাস্থ্য সচেতনতার অভাব – অনেক মানুষ এখনো স্বাস্থ্য সচেতন নয়, ফলে রোগ প্রতিরোধের চেয়ে চিকিৎসার উপর নির্ভরতা বেশি দেখা যায়।

সম্ভাব্য সমাধান ও উন্নয়নের পথ

সরকারি হাসপাতালের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ – জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আধুনিক হাসপাতাল স্থাপন এবং চিকিৎসকদের পর্যাপ্ত নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
কম খরচে মানসম্মত চিকিৎসা ব্যবস্থা – প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিকের চিকিৎসা ব্যয় সাধারণ মানুষের সাধ্যের মধ্যে আনার জন্য সরকারকে নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।
টেলিমেডিসিন ও ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা বৃদ্ধি – অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার ব্যবস্থা আরও সহজ করতে হবে, যাতে গ্রামাঞ্চলের মানুষ সহজেই সেবা পেতে পারে।
বিনামূল্যে ওষুধ ও স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচি – বিশেষ করে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধ সরবরাহ বাড়াতে হবে।
স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ানো – বিভিন্ন প্রচারণার মাধ্যমে সাধারণ জনগণের মধ্যে স্বাস্থ্যবিষয়ক সচেতনতা তৈরি করতে হবে, যাতে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।

উপসংহার

চিকিৎসা সেবায় সহজলভ্যতা নিশ্চিত করা একটি মৌলিক অধিকার। সরকার, বেসরকারি সংস্থা এবং চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট সবার সম্মিলিত উদ্যোগে সুলভ, উন্নত ও আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যাতে প্রতিটি মানুষ নির্ভরযোগ্য স্বাস্থ্যসেবা পেতে পারে। জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত না হলে জাতীয় উন্নয়নও বাধাগ্রস্ত হবে। তাই এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

ডেল্টা টাইমস

ডেল্টা টাইমস

ডেল্টা টাইমস মতামত:

ডেল্টা টাইমস, একটি স্থানীয় বা জাতীয় সংবাদ মাধ্যম হিসেবে, সাধারণত সাধারণ জনগণের উদ্বেগ ও সমস্যা তুলে ধরতে এবং সরকারের নীতি ও কর্মকাণ্ডে পরিবর্তন আনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তারা এমন একটি প্ল্যাটফর্ম হতে পারে যা জনগণের জন্য প্রাসঙ্গিক এবং সময়োপযোগী খবর সরবরাহ করে।

পত্রিকায় প্রকাশিত লেখক তৌফিক সুলতান স্যার এর লেখা,Towfiq Sultan Sir,المؤلف توفيق سلطان السير نشر في جريدة توفيق سلطان السير,Author Towfiq Sultan Sir published in the newspaper, Towfiq Sultan Sir, 


যেমন, দ্বীপাঞ্চলে ব্রিজ নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে রিপোর্ট করা হলে, এটি পাঠকদের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা পৌঁছে দিতে পারে। সংবাদপত্রটি সঠিকভাবে এসব বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে প্রতিবেদনের মাধ্যমে স্থানীয় জনগণের সমস্যা তুলে ধরার কাজ করতে পারে। সরকারের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে এসব বিষয় যাতে দ্রুত সমাধান হয়, তা নিশ্চিত করতে সাহায্য করতে পারে ডেল্টা টাইমসের মতামত।

এছাড়া, সংবাদপত্রটি স্থানীয় মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে পারে, তাদের আইনি অধিকার ও সরকারি সুবিধা সম্পর্কে জানাতে পারে। এইভাবে, এটি শুধুমাত্র সংবাদ প্রকাশের কাজেই সীমাবদ্ধ না থেকে জনগণের সমস্যার সমাধান খোঁজার একটি মাধ্যম হতে পারে।

মোটকথা, ডেল্টা টাইমসের মতামতটি জনগণের জন্য একটি উদ্দীপক এবং শিক্ষামূলক প্রচেষ্টা হতে পারে, যা সমাজের বিভিন্ন সমস্যা এবং সেগুলোর সমাধানে একটি শক্তিশালী ভূমিকা রাখবে।



চিকিৎসা সেবা: গুরুত্ব এবং বর্তমান চ্যালেঞ্জ

চিকিৎসা সেবা বা স্বাস্থ্যসেবা একটি সমাজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে এবং বিভিন্ন রোগ ও অস্বাস্থ্যকর অবস্থার মোকাবিলা করতে সাহায্য করে। চিকিৎসা সেবা জনগণের শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক সুস্থতার জন্য অপরিহার্য। আধুনিক চিকিৎসা সেবা যেমন হাসপাতাল, ক্লিনিক, চিকিৎসক এবং নার্সদের অবদান ছাড়া আমরা কোনোভাবেই সুস্থ থাকতে পারব না। তবে, বর্তমানে নানা কারণে চিকিৎসা সেবার মান এবং প্রাপ্যতার ক্ষেত্রে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে।

চিকিৎসা সেবার গুরুত্ব

  1. রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা: চিকিৎসা সেবা রোগের সঠিক নির্ণয় ও চিকিৎসার মাধ্যমে জীবন বাঁচাতে সাহায্য করে। নানা ধরনের জটিল রোগের চিকিৎসা ও প্রতিকার পেতে চিকিৎসকের পরামর্শ অত্যন্ত জরুরি।

  2. প্রতিরোধ ব্যবস্থা: চিকিৎসকরা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সচেতনতা সৃষ্টি করে, এবং বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে সহায়তা করেন। উদাহরণস্বরূপ, টিকাদান, স্বাস্থ্য শিক্ষা, এবং প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান।

  3. মানসিক স্বাস্থ্য: চিকিৎসা সেবা শুধুমাত্র শারীরিক রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে না, বরং মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন দুশ্চিন্তা, বিষণ্নতা ইত্যাদির চিকিৎসাও গুরুত্বপূর্ণ। এটি ব্যক্তির সামগ্রিক সুস্থতা নিশ্চিত করে।

বর্তমান চ্যালেঞ্জসমূহ

  1. চিকিৎসা সেবার অভাব: দেশের অনেক প্রত্যন্ত অঞ্চলে চিকিৎসা সেবা প্রাপ্যতা নেই। গ্রামীণ এলাকাগুলিতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং আধুনিক যন্ত্রপাতির অভাব রয়েছে, যার ফলে রোগীরা সঠিক সময় চিকিৎসা নিতে ব্যর্থ হয়।

  2. অর্থনৈতিক অক্ষমতা: অনেক মানুষ চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় খরচ বহন করতে অক্ষম। স্বাস্থ্য খাতে যথেষ্ট সরকারি খরচ না থাকায় অনেক দরিদ্র জনগণ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হয়।

  3. মানবসম্পদ সংকট: চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের অভাবও একটি বড় সমস্যা। অনেক অঞ্চলে চিকিৎসকরা অনেক বেশি সময় কাজ করতে বাধ্য হন, যা তাদের মানসিক ও শারীরিক সুস্থতায় প্রভাব ফেলতে পারে।

  4. সুস্থতা ও স্বাস্থ্য সচেতনতার অভাব: অনেক ক্ষেত্রেই জনগণের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতার অভাব দেখা যায়, যার ফলে সময়মতো চিকিৎসা নেওয়া হয় না। কিছু লোক রোগের শুরুতেই চিকিৎসক দেখাতে না গিয়ে, চিকিৎসা বিলম্বিত করে এবং এর ফলে স্বাস্থ্য পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে পড়ে।

সমাধান

  1. স্বাস্থ্যসেবায় বিনিয়োগ বৃদ্ধি: সরকারের উচিত স্বাস্থ্য খাতে আরো বেশি বাজেট বরাদ্দ দেওয়া, যাতে মানুষের জন্য আধুনিক চিকিৎসা সুবিধা সহজলভ্য হয়।

  2. গ্রামীণ স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়ন: গ্রামাঞ্চলে চিকিৎসকদের সংখ্যা বৃদ্ধি করা এবং তাদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু করা যেতে পারে, যাতে তারা আধুনিক চিকিৎসার বিষয়ে আরও দক্ষ হয়ে ওঠেন।

  3. স্বাস্থ্য শিক্ষা ও সচেতনতা: জনগণের মধ্যে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও সচেতনতা বৃদ্ধি করা উচিত, যাতে তারা সময়মতো চিকিৎসা গ্রহণের গুরুত্ব বুঝতে পারে।

  4. এম্বুলেন্স সেবা ও দ্রুত চিকিৎসা: জরুরি চিকিৎসা সেবার জন্য এম্বুলেন্স সেবা এবং প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোকে আরও শক্তিশালী করা উচিত।

চিকিৎসা সেবা এক্ষেত্রে মানুষের মৌলিক অধিকার, এবং এই সেবার উন্নতি আমাদের সবাইকে একটি সুস্থ, সুখী এবং উন্নত জীবনধারার দিকে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে।

বুধবার, নভেম্বর ১৫, ২০২৩

ডায়বেটিস প্রতিরোধে নিজেকে সচেতন হতে হবে শুনতে হবে ডাক্তারের পরামর্শ

ডায়বেটিস প্রতিরোধে নিজেকে সচেতন হতে হবে শুনতে হবে ডাক্তারের পরামর্শ

সত্যের সন্ধানে বলিষ্ঠ, সত্য প্রকাশে নির্ভীক...

ডায়বেটিস প্রতিরোধে নিজেকে সচেতন হতে হবে শুনতে হবে ডাক্তারের পরামর্শ 

তৌফিক সুলতান



বর্তমানে বিশ্বে ৪০ কোটি মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। বাংলাদেশে এ সংখ্যা ১ কোটি ৩০ লাখের মতো।
বিশ্বে প্রতি ১০ জনে ১ জন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত বাংলাদেশে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, অর্ধেকই নারী।ডায়াবেটিস একটি মেটাপলিক রোগ। ইনসুলিনের পরিমাণ কমে গেলে রক্তে চিনির পরিমাণ বেড়ে যাবে। এজন্য পারিপার্শ্বিক ও বংশগত দুই কারণই থাকে। 

ডায়াবেটিস আর হৃদরোগ এতটাই পারস্পরিক সম্পর্কযুক্ত যে, আমরা যে সকল রোগীদের এনজিওগ্রাম করি, তাদের মধ্যে যাদের ব্লক পাওয়া যায় অথবা রিং পরানো লাগে তাদের বেশির ভাগই ডায়াবেটিসে ভুগতে থাকেন। ডায়াবেটিস রোগীদের করোনারি ধমনিতে ব্লক হওয়ার জন্য তাদের কারো কারো রিং লাগে আবার কারো কারো বাইপাস সার্জারি লাগে। সেজন্য যদি প্রথম চেকেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে পারা যায় তাহলে হৃদরোগ এড়ানো সহজ হয়। দেখা যাচ্ছে বিশ্বব্যাপী যাদের ডায়াবেটিস আছে, তাদের হৃদরোগ হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৫ বছরের নিচের যুবকদের নিয়ে একটি গবেষণায় দেখা যায়। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে যে বয়সে হৃদরোগ হয়, সে বয়সে বাংলাদেশে প্রায় ১৭-২৫ গুণ বেশি হৃদরোগ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাই আমরা বলছি, যাদের পরিবারে ডায়াবেটিস আছে, তাদের হৃদরোগও বেশি দেখা যায় আর যাদের তামাক জাতীয় দ্রব্য নেওয়ার অভ্যাস আছে। যারা শারীরিক পরিশ্রম কম করে বা হাঁটাহাটি কম করে, চর্বি জাতীয় খাদ্য বেশি খায় এবং কাঁচা শাক-সবজি ও ফলমূল কম গ্রহণ করে তাদের ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ বেশি হয়ে থাকে। সাধারণ হৃদরোগী আর ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে উপসর্গের পার্থক্য আছে। প্রথমত হৃদরোগ যাদের করোনারি ধমনিতে সমস্যা আছে, তাদের হয়ে থাকে। যদি এটি ১০০% ব্লক হয়, তাহলে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। আর যদি ৭০-৯৫% ব্লক হয় তাহলে হাঁটলে বুকে ভার অনুভূত হবে। আর যাদের মধ্যে নিয়ন্ত্রণহীন ডায়াবেটিস থাকে তাদের হার্ট অ্যাটাক হলেও বুকে ব্যথা নাও হতে পারে। যাদের ডায়াবেটিস নরমাল তাদের বুকে ব্যথা, প্রচুর ঘাম যাওয়া আর বমি হলেও যাদের অনিয়ন্ত্রিত তাদের এগুলো নাও হতে পারে। তার মানে যাদের ডায়াবেটিস আছে তারাই বেশি হৃদরোগ ঝুঁকিতে আছেন। অন্যরা যেখানে রোগের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বুকের ব্যথা বুঝতে পারছেন, সেখানে ডায়াবেটিস রোগীরা কিছুই বুঝতে পারছেন না। এটি তাদের জন্য বড় একটি অশনিসংকেত। এই একটি পার্থক্য চিকিৎসকগণ বিশেষভাবে জোর দিয়ে থাকে। তাছাড়া যাদের ডায়াবেটিস আছে, তাদের রক্তনালীতে এমন এমন কিছু ব্লক হয়ে যায় যা একেবারে ডিফিউজ বা খুব খারাপ ধরনের। আর যাদের ডায়াবেটিস নেই তাদের রক্তনালীতে পাওয়া যায় ছোট ছোট ব্লক। তাই তাদের রক্তের শর্করা সুনিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে। এতে কোনো কার্পণ্য করা যাবে না। আমরা সবসময় চারটি "ডি" এর কথা বলে থাকি। এক. ডায়েট। দুই. ডিসিপ্লিন। তিন. ড্রাগ। চার. ড্রিম বা ঘুম। এই চারটি "ডি" কে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে আমরা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারবো।

 ডায়াবেটিস রোগীদের যে বিষয়গুলো হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে তা হলো ডায়াবেটিস বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। আমরা টাইপ-২ ডায়াবেটিস নিয়েই বেশি আলোচনা করেছি। কারণ এই ডায়াবেটিসটাই বেশি হয়ে থাকে এবং যার সঙ্গে হৃদরোগের ঝুঁকিটাও একটু বেশি থাকে। যদি আমরা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে না পারি, তাহলে ব্রেইন স্ট্রোক হতে পারে, ঘাড়ের রক্তনালীতে ব্লক হতে পারে, হার্টের রক্তনালীতে ব্লক হতে পারে, হাতের রক্তনালীতে ব্লক হতে পারে, কিডনির রক্তনালীতে ব্লক হতে পারে, পায়ের রক্তনালীতে ব্লক হয়ে লেগ অ্যাটক হতে পারে। এর ফলে দেখা গেল রোগীর আঙুল কেটে ফেলতে হয় এবং পা কেটে ফেলতে হয়। তাই চিকিৎসকদের পরামর্শ হলো ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে হার্ট অ্যাটক হবে না আর মস্তিস্কের রক্তনালীতেও কোনো ব্লক হবে না এবং পায়ের রক্তনালীতেও ব্লক হবে না। অর্থাৎ ডায়াবেটিস শরীরের প্রত্যেকটি অঙ্গে আঘাত হানতে পারে যা হার্ট অ্যাটাকের দিকে নিয়ে যায়। হার্টের সংকোচন-প্রসারণের মাধ্যমেই হার্টফেল হয়। সাধারণভাবে আমরা অনেককে বলে থাকি অনেক বড় হৃদয়ের মানুষ। কিন্তু মেডিকেলের ভাষায় এই হার্ট বড় হয়ে যাওয়াকেই বলা হয় কার্ডিওমায়ুপেথি। অর্থাৎ এই বুকের হার্টটা যদি পেটে চলে আসে, হার্ট বড় হয়ে যায়, হার্টের মাংসপেশি বড় হয়ে যায়, তখন তাকে বলা হয়ে থাকে কার্ডিওমায়ুপেথি। আর এর সঙ্গে ডায়াবেটিস ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কারণ হার্টের সকল রোগের সাথে ডায়াবেটিসের একটা সম্পর্ক আছে।

পেস্টিং ব্লাড সুগার আর এইচবিএ১সি খালি পেটে ৭.১ মিলিমল যদি খাওয়ার দু’ঘন্টা পরে লেভেল ০.১ এর উপরে বা এইচবিঅনসি ৬.৫% এর উপরে থাকে তখন তাকে বর হয় ডায়াবেটিস। 
 কম বয়সীদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে

 ডায়াবেটিস কিন্তু খুব ছোট বয়সে এমনকি জন্মের পরপরও হতে পারে। আর সেটি হলো টাইপ-১ ডায়াবেটিস। যেহেতু তার বয়স কম, সেহেতু তার ডায়েবেটিস সেরকম কিনা যাচাই করতে হবে। আর টাইপ-১ হলো ইনসুলিন নির্ভর ডায়াবেটিস। তাই ট্যাবলেট খেয়ে এটি সমাধান করা যাবে না। ধরুন, ডোজের ক্ষেত্রে যদি সকাল বেলা ১০ ইউনিট আর রাতের বেলা ৮ ইউনিট ইনসুলিন দেওয়া হলো। তখন যদি সকাল বেলা খালি পেটে মাপার পর রক্তে শর্করার মাত্র বেশি থাকে, তাহলে রাতের ডোজটি বাড়াতে হবে। আর খাওয়ার দুই ঘণ্টা পর যদি তার ডায়াবেটিসের মাত্রা বেশি থাকে তাহলে সকালের ইনসুলিনের ডোজ বাড়াতে হবে। এভাবে দুপুরে খাবার আগে আর দুপুরে খাবার পরে, রাতে খাবার আগে আর রাতে খাওয়া পরে এরকম প্রতিদিন অন্তত তিন দিন ছয় বেলা মাপতে পারলে তাহলে তার রোগের প্রোফাইলটি পাওয়া যাবে। তখন চিকিৎসক তার ইনসুলিনের পরিমাণ নির্দিষ্ট করে দিতে পারি। তাই মনে রাখতে হবে, চিকিৎসক যেভাবে লিখে দেবে, সেভাবে চলবে তা কিন্তু নয়। এখন যেহেতু অনেক আধুনিক যন্ত্রপাতি আছে। তাই সে সকল যন্ত্রের সাহায্যে একজন চিকিৎসক ক্যালরি হিসেব করে পাম্পের মাধ্যমে ইনসুলিনের ডোজটি দিয়ে থাকে। তবে রোগীর উচিত হবে কোন খাবারে কত ক্যালরি আছে তা জেনে নেওয়া। তখনই রোগী তার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হবে।

ডায়াবেটিস যে কারো হতে পারে। তবে পরিবারের যদি বাবা-মায়ের যে কোনো একজনের ডায়াবেটিস থাকে, তাহলে সন্তানদের হওয়া সম্ভাবনা ৪০ শতাংশ আর যদি দু’জনেরই থাকে তাহলে ৮০ শতাংশ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে বাবা-মায়ের থাকলে যে সন্তানদের হবে তা কিন্তু ঠিক নয়। আবার কেউ যদি অল্পতেই মোটা হয়ে যান তাহলে, সেটা ডায়াবেটিসের কারণ হতে পারে। আবার অনেকে বলে থাকে মিষ্টি খেলে ডায়াবেটিস হয়। এটি ভুল ধারণা। তবে ডায়াবেটিস হলে সুগার খেতে বারণ করা হয় যাতে রক্তের শর্করা হঠাৎ করে বেড়ে না যায়। আরেকটি বিষয় হলো, কেউ যদি ছোটবেলা থেকেই খাদ্যাভাস মেনে চলেন, হাঁটাহাঁটি করেন বা কায়িকশ্রম করেন, তাদের পরিবারের ঝুকি থাকলেও তা প্রতিরোধ করতে পারবেন। বিশেষ করে জর্দা, তামাক, সাদাপাতা ইত্যাদি যদি ব্যবহার না করেন, তাহলে তার ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে মহিলাদের যখন মাসিক চলে, তখন হৃদরোগের আশংকা কম থাকে। কিন্তু পুরুষদের ঝুঁকি বেশি থাকে। আবার মাসিক বন্ধ হওয়ার পরে নারীদের হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তবে দেখা যাচ্ছে এখন সকল বয়সের নারী-পুরুষদের ডায়াবেটিস হচ্ছে।

ডায়াবেটিস বা অ্যাজমা বা রক্তচাপ যেটি বলুন না কেন এগুলো একবার হলে সারা জীবন থেকে যায়। ঠিক তেমনি হৃদরোগ একবার হলে, সারা জীবন থেকে যায়। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, ডায়াবেটিস বা হৃদরোগ হয়েছে, তাই জীবন শেষ হয়ে গেল। আধুনিক চিকিৎসায় এগুলো প্রশমন করা সম্ভব হচ্ছে। আর অবশ্যই অনুমিত নিয়ম-কানুনগুলো ঠিকমত পালন করলে এগুলো থেকে মুক্ত হওয়া সম্ভব।

 ডায়াবেটিস রোগীরা হৃদরোগ এড়াতে প্রথমে অবশ্যই খাদ্যাভ্যাস মেনে চলতে হবে। কাঁচা ফলমূল বেশি খেতে হবে। ভাত, চিনি, লবণ- এই তিন সাদা জিনিসকে পরিহার করতে হবে। আর অবশ্যই আঁশ জাতীয় খাবার বেশি খেতে হবে এবং সিম্পল কার্বোহাইড্রেট ও চর্বিযুক্ত খাদ্য পরিহার করতে হবে। হাঁটাহাঁটি, জগিং, সাইক্লিং, সাঁতারকাটা ইত্যাদি করা যেতে পারে। কারণ এগুলো খুব উপকারী অভ্যাস। বিশেষ করে হাঁটাহাঁটির অভ্যাস থাকলে যে কেউ একসঙ্গে ডায়াবেটিস আর হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। সর্বেশষ বলবো, আপনি হাঁটুন, হাঁটুন এবং হাঁটুন। ডায়াবেটিস যত তাড়াতাড়ি শনাক্ত করা যাবে, সেই রোগীর জন্য সেটা ততো ভালো। তাতে তিনি যেমন রোগটির চিকিৎসা দ্রুত শুরু করতে পারবেন, পাশাপাশি তার জীবনযাপনও একটি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে চলে আসবে।


টাইপ-২ ধরণের ডায়াবেটিসের ৭৫ শতাংশ ক্ষেত্রেই আগেভাগে সতর্ক থাকলে, শারীরিক পরিশ্রম করলে এবং খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাপনে নিয়ন্ত্রণ আনলে ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব। কিন্তু একবার ডায়াবেটিস হয়ে গেলে আর এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় না।


যে সব লক্ষণ দেখলে সতর্ক হতে হবে:


১।চামড়ায় শুষ্ক, খসখসে ও চুলকানি ভাব
২। দুর্বল লাগা' ঘোর ঘোর ভাব আসা
৩।ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া ও পিপাসা লাগা
৪।ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া
৫।মিষ্টি জাতীয় জিনিসের প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যাওয়া
৬।সময়মতো খাওয়া-দাওয়া না হলে রক্তের শর্করা
৭।কমে হাইপো হওয়া
৮।বিরক্তি ও মেজাজ খিটখিটে হয়ে ওঠা
৯।চোখে কম দেখতে শুরু করা
১০।কোন কারণ ছাড়াই অনেক ওজন কমে যাওয়া
১১।শরীরে ক্ষত বা কাটাছেঁড়া হলেও দীর্ঘদিনেও সেটা না সারা


মনে রাখবেন 

১। করলা, চিরতা এসব খেলে উপকার হয় কি না সেটি এখনো তেমনভাবে আবিষ্কার হয়নি। তবে আসল কথা হলো অনেকে চিরতা বা করলাতেই চিকিৎসা মনে করেন। মনে রাখতে হবে, এসবে কিছুটা উপকার পেলেও আহার নিয়ন্ত্রণ, ব্যায়াম ও ওষুধ গ্রহণ চালিয়ে যেতে হবে।

২। আজকাল যে আধুনিক সিরিঞ্জ বের হয়েছে তাতে ব্যথা হয় না বললেই চলে, আর রোগী যদি ইনসুলিন নেওয়ার ১৫-২০ মিনিটের মধ্যে খাবার গ্রহণ করেন তবে হাইপোগ্লাইসিমিয়া হওয়ার আশঙ্কা থাকে না।

৩। ডায়াবেটিস একটি সারা জীবনের রোগ। তাই নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন করতে হবে সব সময়, আর নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করলে তিনিই বলে দেবেন, ওষুধের ডোজ কমাতে বা বাড়াতে হবে, কিংবা ওষুধ ছাড়া জীবনযাত্রার মান নিয়ন্ত্রণ করলেই চলবে কি না।
৪। ইনসুলিন অনির্ভরশীল ডায়াবেটিসে ট্যাবলেট খাওয়া যেতে পারে; কিন্তু ইনসুলিন নির্ভরশীল ডায়াবেটিসে এটাই একমাত্র চিকিৎসা। 
৫। শরীরে ইনসুলিন কমার ফলেই তো ডায়াবেটিস হয়। তাই সরাসরি ইনসুলিন দেওয়াই উত্তম। আর মুখে খাওয়ার ওষুধগুলো নিজেরা ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না। তারা অসুস্থ অগ্ন্যাশয় থেকে চুইয়ে চুইয়ে ইনসুলিন বের করে। তাই প্রথমদিকে অসুস্থ অগ্ন্যাশয়কে বিশ্রাম দেওয়ার জন্যও ইনসুলিন দেওয়া প্রয়োজন।
৬। ডায়াবেটিস ছোঁয়াচে রোগ নয়।কারো বাবার ডায়াবেটিস থাকলে তার ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা অন্যদের তুলনায় ছয়গুণ বেশি। মায়ের ডায়াবেটিস থাকলে এ আশঙ্কা বাড়বে তিনগুণ আর বাবা-মা উভয়ের থাকলে এ আশঙ্কা ২০ গুণ বেড়ে যাবে। সুতরাং ডায়াবেটিসে বংশগত প্রভাব কিছুটা তো আছেই।
৭। চিনি খেলে কখনো ডায়াবেটিস হয় না; তবে ডায়াবেটিস হয়ে গেলে অবশ্যই চিনি কম খেতে হবে বা একেবারে খাওয়া যাবে না।


ডায়াবেটিস যেহেতু অসংক্রামক ব্যাধি তাই এর সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ জানা যায়নি। তবে পারিবারিক ইতিহাস, অধিক মাত্রায় খাদ্যগ্রহণ, কায়িক শ্রমের ঘাটতি, শরীরের অতিরিক্ত ওজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব বয়স, রক্তে ক্ষতিকর চর্বি বেড়ে যাওয়া, গর্ভাবস্থা, অতিরিক্ত মানসিক চাপ, বিষণ্নতা তথা সার্বিক জীবনযাপনের ধরনের সঙ্গে ডায়াবেটিসের যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া গিয়েছে।কথায় আছে রোগ প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম। ডায়াবেটিস রোগ-প্রতিরোধ বলতে তিনটি ধাপে বা পর্যায়ে প্রতিরোধ করা বোঝায়। প্রথম ধাপটি হচ্ছে ডায়াবেটিস হওয়ার আগেই একে প্রতিরোধ করা। একে প্রাথমিক প্রতিরোধ বা প্রাইমারি প্রিভেনশন বলে। নিয়ন্ত্রিত এবং সুশৃংখল জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে খুব সহজেই একে অনেকাংশে প্রতিরোধ করা যায়। অধিক ক্যালরিযুক্ত খাবার, ফাস্টফুড, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাবার, চকোলেট, আইসক্রিম ইত্যাদি পরিহার করতে হবে।প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাকসবজি, ফলমূল, মাছ, কম চর্বি ও কম শর্করাযুক্ত খাদ্য গ্রহণে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। কায়িক শ্রমের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। শিশুদের ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। এজন্য চাই সামাজিক সচেতনতা।

প্রতিরোধের দ্বিতীয় ধাপ হচ্ছে দ্রুত রোগ শনাক্তকরণ ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান।

ডায়াবেটিসের জটিলতাগুলো রোগের প্রাথমিক ধাপ থেকেই শুরু হয়। সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় তাই ডায়াবেটিসের চিকিৎসা ও জটিলতা প্রতিরোধের অন্যতম পূর্বশর্ত। বয়স ৪৫ বা তার বেশি হলে, ওজন বেশি হলে, রক্ত সম্পর্কীয় নিকটাত্নীয়ের ডায়াবেটিস থাকলে, শারীরিক পরিশ্রমের ঘাটতি, মহিলাদের গর্ভকালীন ডায়াবেটিস বা অধিক ওজনের সন্তান প্রসবের পূর্ব ইতিহাস থাকলে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা জরুরি।

পরিমিত খাদ্য, সুশৃংখল জীবন ও নিয়মিত ওষুধ সেবন এই তিনটি নীতি ডায়াবেটিসের রোগীরা সঠিকভাবে পালন করলে সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবেন। প্রতিরোধের তৃতীয় ধাপ হচ্ছে ডায়াবেটিসজনিত জটিলতার শনাক্তকরণ ও এর সঠিক চিকিৎসা। ডায়াবেটিস নীরবে রোগীর চোখ, রক্তনালি, হার্ট, কিডনি ও স্নায়ুতন্ত্রের ভয়ানক ক্ষতি করে থাকে।
অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসকে প্রয়োজনীয় ওষুধের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা এবং ডায়াবেটিসজনিত জটিলতাগুলো এড়াতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। জটিল রোগীদের সুচিকিৎসার বন্দোবস্ত করা ও পুনর্বাসন করাও ডায়াবেটিস চিকিৎসার গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

ডায়াবেটিসের কারণ, নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা ও প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। কার্যকর স্বাস্থ্য শিক্ষার মাধ্যমে ডায়াবেটিস-এ আক্রান্ত ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ, নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম, ওজন নিয়ন্ত্রণ তথা সুশৃংখল জীবনযাপনে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও চিকিৎসা একটি সমন্বিত, সামাজিক পদক্ষেপ।
সরকার, চিকিৎসক, কোনো প্রতিষ্ঠান বা কারও একার পক্ষে কখনও এই বিপুল কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব নয়। একে প্রতিরোধ করার জন্য সমাজের সকল স্তরে, পরিবার থেকে শুরু করে রাষ্ট্র পর্যন্ত সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।


সোমবার, অক্টোবর ২৩, ২০২৩

চিকিৎসকের পরামর্শ মানতে হবে সবাইকে গ্যাস্ট্রিক থেকে রক্ষা পেতে

চিকিৎসকের পরামর্শ মানতে হবে সবাইকে গ্যাস্ট্রিক থেকে রক্ষা পেতে

সত্যের সন্ধানে বলিষ্ঠ, সত্য প্রকাশে নির্ভীক...

গ্যাস্ট্রিক সমস্যা বর্তমান সময়ের সবার একটা কমন সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে। দিন দিন মানুষের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বেড়েই চলছে। খাবারে ভেজাল, অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, ও ধূমপানসহ নানা কারণে গ্যাস-গ্যাস্ট্রিক প্রায় ঘরোয়া রোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গ্রাম থেকে শহরে সকল মানুষেরই কম বেশি গ্যাস্ট্রিক রয়েছে। বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার হিসাবেও দেশে গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ বিক্রি হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। যার অধিকাংশই বিক্রি হয় থাকে কোনো ধরনের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবন ডেকে আনছে মারাত্মক ক্ষতি। আমরা তাহলে প্রথমে জেনে নেই গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটি কি? 
গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটি হল পাকস্থলীতে এসিডের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া এবং অবশেষে ক্ষতের সৃষ্টি করা। সাধারণত অতিরিক্ত ঝাল, মসলাযুক্ত খাবার, ভাজাপোড়া জাতীয় খাবারে এটি বেশি হতে পারে। কারণ এসব খাবারকে হজম করতে অতিরিক্ত এসিডের দরকার হয়; ফলে অনেক হাইড্রোজেন ক্ষরণ হয়ে ক্লোরিনের সঙ্গে মিলে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড তৈরি করে।এ এসিডের পরিমাণ বেশি হলে আমাদের পাকস্থলীর চামড়া ভেদ করে এবং আলসার (ঘা) তৈরি হয়, তখন আমরা ব্যথা অনুভব করি। 
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, গ্যাস্ট্রিক হলে বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। যেমন- খিদে কম পায়, পেটে গ্যাস হয়, বুক জ্বালা করে, পেটের মাঝখানে চিনচিনে ব্যথা হতে পারে। বুক ও পেটে চাপ অনুভূত হয়, হজমে অসুবিধা হয় এমনকি আক্রান্ত ব্যক্তির বারবার বমিও হতে পারে। লক্ষণীয় বিষয় বাইরের খাবারের প্রতি মানুষের আগ্রহ বেড়েছে দিন দিন তা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। শহরেও গড়ে উঠেছে বড় বড় রেস্তোরাঁ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন অভিযানে যে ধরনের তথ্য পাওয়া গেছে তাতে খাবার গ্রহণে আমাদের অবশ্যই আরও সচেতন থাকতে হবে। এদিকে অতিমাত্রায় ফাস্টফুডে আসক্তির কারণে যে গ্যাস্টিক সমস্যা বাড়ছে একথা অস্বীকার করার উপায় নেই।
Towfiq Sultan (DMCH)




দীর্ঘসময় যাবৎ খাবারের অনিয়ম এবং অতিরিক্ত তৈলাক্ত ও ভাজাপোড়া খাবারের কারণে অনেককেই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় পড়তে দেখা যায়। যারা এই সমস্যায় ভোগেন তাদের খাবারে সামান্য একটু অনিয়ম হলেই শুরু হয়ে যায় গ্যাস্ট্রিকের মারাত্মক ব্যথা। অনেক সময় অতিরিক্ত অনিয়মে এই সাধারণ গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাই সৃষ্টি করে আলসার। তাই শুরুতেই সতর্ক হওয়া জরুরি। জেনে নিন গ্যাস্ট্রিক সমস্যার চটজলদি দারুণ কিছু প্রাকৃতিক সমাধান। সম্পূর্ণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াবিহীন এই সমাধানগুলো দূর করবে সাধারণ গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা।




১) হলুদের পাতা
হলুদের পাতা কুচি করে কেটে প্রতিদিন দুধের সাথে মিশিয়ে পান করে নিন। এতে করে পেটে ব্যথা এবং গ্যাসের সমস্যার সমাধান হবে।

২) বেকিং সোডা
বেকিং সোডা পেটের অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে তাৎক্ষণিক রেহাই পেতে সাহায্য করে। ১ গ্লাস পানিতে ১/৪ চা চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে পান করুন।ভালো ফলাফল পাবেন।

৩) কাঁচা আলুর রস
আলু স্লাইস করে কেটে ওপরে কিছুটা লবণ ছিটিয়ে রেখে দিন পুরো রাত।
পরের দিন এই আলুর রস বের করে পান করুন। দিনে ৩ বার আধা কাপ আলুর রস পান করলে খুব ভালো ফলাফল পাবেন।
৪) দারুচিনি
দারুচিনি খুব সহজেই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার সমাধান করতে কার্যকরী। দারুচিনি অ্যাসিডিটি সমস্যা কমায়, গ্যাস দূর করে। দারুচিনি প্রদাহ কমায় এবং ব্যাকটেরিয়া দূর করতেও বিশেষভাবে কার্যকরী। ভালো ফলাফল পেতে কফি, দুধ অথবা ওটমিলের সাথে দারুচিনি গুঁড়ো যোগ করে নিন।
৫) পেয়ারা পাতা
২ কাপ পানিতে পেয়ারা পাতা দিয়ে ফুটিয়ে নিন। পানি ১ কাপ পরিমাণে হলে ছেঁকে পান করুন। এতেও বেশ ভালো উপকার হবে।

৬) আদা
আদার ওষধি গুণ গ্যাসের সমস্যা, বুক জ্বালাপোড়া, হজমে সমস্যা এবং অ্যাসিডিটির সমস্যা দ্রুত সমাধানে সক্ষম। কাঁচা আদা চিবিয়ে খেতে পারেন অথবা আদার রস বের করে পান করতে পারেন কিংবা আদা পানিতে ফুটিয়ে চায়ের মতো পান করে নিলেও সমস্যার সমাধান হবে।

৭) আপেল সাইডার ভিনেগার
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে তাৎক্ষণিক রেহাই পেতে এর জুড়ি নেই। ১ গ্লাস কুসুম গরম পানিতে ২ টেবিল চামচ আপেল সাইডার ভিনেগার মিশিয়ে পান করে ফেলুন।


আসুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক গ্যাস্ট্রিক থেকে বাঁচার উপায় কি?

১। ঘুমানোর কমপক্ষে ২ ঘণ্টা আগে রাতের খাবার খেয়ে নিন
২। প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে দুপুর ও রাতের খাবার খাবেন।
৩। শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমান। নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
৪। একবারে বেশি পরিমাণে না খেয়ে অল্প করে বারবার খান।
৫। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া পেট খারাপ বা বমির ওষুধ কিনে খাবেন না।
৬। দিনে কিংবা রাতে খাওয়ার পরপরই অনেকে শুয়ে পড়তে পছন্দ করেন। এটা না করে কিছুক্ষণ আস্তে আস্তে হাঁটাচলা করতে পারেন অথবা বসে থাকতে পারেন সোজা হয়ে। অন্তত ৩০ মিনিট পর ঘুমাতে যান।
৭। ধূমপান ও মদ্যপানকে এড়িয়ে চলুন।
৮। অতিরিক্ত তেল ও মসলা দেয়া খাবার খাবেন না। বাইরের খাবার না খেয়ে বাড়ির তৈরি খাবার খান। তাজা খাবার খান, স্টোর করা বা ফ্রোজেন ফুড কম খাবেন।
৯। খাওয়ার পরপরই অনেক বেশি পানি পান করার প্রবণতা বাদ দিন। ভাত খাওয়ার অন্তত ৩০ মিনিট পর পানি পান করুন।
১০। মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা অনেক সময় এসব সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। তাই মানসিক চাপ নেবেন না।

১১। তৈলাক্ত খাবার বাদ দিতে চেষ্টা করুন। মাংস, ডিম, বিরিয়ানি, মোগলাই, চায়নিজ খাবার যা-ই খান না কেন, তা দুপুরের মেন্যুতে অন্তর্ভুক্ত করুন। রাতের খাবারটি যেন হালকা হয়। শাকসবজি, ছোট মাছ এসব দিয়ে রাতের মেন্যু সাজান।


[প্রিয় পাঠক, আপনিও দৈনিক অনুসন্ধান অনলাইনের অংশ হয়ে উঠুন। লাইফস্টাইলবিষয়ক ফ্যাশন, স্বাস্থ্য, ভ্রমণ, নারী, ক্যারিয়ার, পরামর্শ, এখন আমি কী করব, খাবার, রূপচর্চা ও ঘরোয়া টিপস নিয়ে লিখুন এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ছবিসহ মেইল করুন- welftion.help@gmail.com -এ ঠিকানায়। লেখা আপনার নামে প্রকাশ করা হবে।]